অপরাধের প্রশ্রয়, ক্ষমতার অপব্যবহার, চাঁদাবাজি ও দুর্বল নৈতিক অবস্থানের কারণে খুলনায় সামাজিক অবক্ষয় বাড়ছে। সেই সঙ্গে অপরাধ প্রবণতাও লক্ষণীয়ভাবে বেড়ে চলেছে। জানা যায়, গত তিন দিনে খুলনায় স্ত্রীর পরকীয়ার জের ধরে প্রতিবেশীকে কুপিয়ে হত্যা, হাত-পা বাঁধা অবস্থায় যুবকের লাশ উদ্ধার, নৌবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নামে ৩৮ জনের সঙ্গে প্রতারণা, দুস্থ নারীকে ছুরিকাঘাতে হত্যা, পুলিশকে মারধর করে হ্যান্ডকাপসহ আসামি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সাম্প্রতিক সময়ে নৃশংস হত্যাকান্ড ও সামাজিক অবক্ষয় বৃদ্ধিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মানবাধিকার সংগঠনের কর্মীরা। বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার খুলনা সমন্বয়কারী অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম বলেন, এখনই অপরাধ তৎপরতা নির্মূল করতে না পারলে ভবিষ্যতে তা ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধিতে রূপ নেবে।
গত ২২ মে রাতে রূপসা ভবানীপুর গ্রামে মনি শেখ তার স্ত্রী তানজিলার (৩৫) সঙ্গে প্রতিবেশী আবদার শেখকে ঘরের বিছানায় দেখে ধারালো দা দিয়ে দুজনকে কুপিয়ে জখম করে। আবদার শেখ ঘটনাস্থলে নিহত হয়। পরে তার লাশ বাথরুমের পাশে খালি জায়গায় গর্তে বস্তাবন্দি করে ফেলে দেওয়া হয়। পরদিন ২৩ মে রূপসা শিপইয়ার্ডের সামনের রাস্তা থেকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় যুবকের লাশ উদ্ধার হয়। তার নাক-মুখ পলিথিন দিয়ে মুড়িয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। এর আগে ২০ মে নৌবাহিনীতে নিয়োগের কথা বলে প্রতারণার ঘটনায় প্রতারক চক্রের ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গত ১৩ মে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় জানানো হয়, গত এপ্রিল মাসে জেলার বিভিন্ন স্থানে ৬টি হত্যাকান্ড, ৫টি ধর্ষণসহ ১৫৪টি মামলা হয়েছে। একই মাসে নগরীতে দুটি হত্যা, ২৩টি চুরি, ৬টি ধর্ষণ, ৯টি শিশু নির্যাতনসহ ১৫৫টি মামলা হয়। যা আগের মাসের তুলনায় ২৫টি কম।
এদিকে, খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) এস এম আল-বেরুনী জানান, জেলা পুলিশের আওতাধীন এলাকায় দিনের বিভিন্ন সময় নিয়মিত টহল ও বিশেষ চেকপোস্টের মাধ্যমে পুলিশি তদারকি চলমান আছে। কেএমপি অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মো. হুমায়ুন কবির জানান, খুলনায় মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকারী অপরাধীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার ও মাদকের বেশ কিছু স্পট বন্ধ করতে পুলিশ সক্ষম হয়েছে।