কয়েকদিন টানা বৃষ্টির পর গতকাল সকালে হালকা রোদ উঠেছিল। দুপুরে রাজধানীর আকাশ আবার মেঘাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। শুরু হয় বৃষ্টি। এই বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকায় সড়কে জমে যায় পানি। জলজটের পাশাপাশি সৃষ্টি হয় যানজট। এতে ভোগান্তিতে পড়েন মানুষ। গণপরিবহন চলাচল বিঘ্নিত হওয়ায় বিপাকে পড়েন অনেকেই।
রাজধানীর মিরবাগের বাসিন্দা রুপালী ইসলাম। গতকাল সকালে গিয়েছিলেন মিরপুর-১৪ নম্বরের সিআরপি হাসপাতালে। মেয়েকে ডাক্তার দেখিয়ে দুপুরে বাসার উদ্দেশে রওনা দেবেন, এমন সময় নামে ঝুম বৃষ্টি। ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা শেষে বৃষ্টি কিছুটা কমলেও বাসায় ফেরার পথে পড়ে যান বিপত্তিতে। ৩০০ টাকার সিএনজি ভাড়া ৬০০ টাকা। জলজট ও যানজটের কারণে ৪৫ মিনিটের রাস্তায় সময় লাগে দুই ঘণ্টা। গতকাল বৃষ্টির কারণে রাজধানীর নিউমার্কেট, সায়েন্সল্যাব, আজিমপুর, ধানমন্ডি, শংকর, মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, গাবতলী, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, ধূপখোলা, গেন্ডারিয়া, নয়াপল্টন, পুরানা পল্টন, শান্তিনগর, মগবাজার, রামপুরা, বাড্ডা, মেরুল, মহাখালী, শাহজালাল বিমানবন্দরের সামনের সড়ক, টিটিপাড়া, গোপীবাগ, টিকাটুলী, নারিন্দা, স্বামীবাগ, গেন্ডারিয়ায় মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। সরেজমিন দেখা যায়, খিলক্ষেত-লেকসিটি রোডের কোথাও কোথাও হাঁটুপানিরও বেশি। গলির রাস্তায় পানি আরও অনেক বেশি। অধিকাংশ দোকানের ভিতর পানি ঢুকেছে। খিলক্ষেতের বাসিন্দা মানিক মিয়া বলেন, বৃষ্টি হলেই খিলক্ষেত-লেকসিটি রোড পানির নিচে ডুবে যায়। এখানে অধিকাংশ দোকানের ভিতর পানি ঢুকে যায়। রাস্তার ওপর যেন পানির স্রোত চলে। এই পানি সহজে নামেও না। বেশ কয়েক দিন স্থায়ী হয়। এ এলাকার মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়লেও যেন দেখার কেউ নেই।
সড়কে জলাবদ্ধতা হওয়ায় বিপাকে পড়তে দেখা গেছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও কর্মজীবী মানুষকে।
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী হাবিব বলেন, অল্প বৃষ্টিতেই সব সময় নিউমার্কেট এলাকা তলিয়ে যায়। প্রতি বছর বর্ষাকালে এ সমস্যাটা হয়। অথচ সিটি করপোরেশন কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয় না। এমনকি ড্রেনেজ ব্যবস্থারও উন্নতি করে না।
নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী সাত্তার বলেন, মার্কেটে পানি ঢুকে পড়েছে। তাই দোকান খুলতে পারেননি। সারা দিন বেচাকেনা বন্ধ। প্রতি বছর বর্ষাকালে নিউমার্কেট এলাকা পানিতে ডুবে যায়। অথচ সিটি করপোরেশন কোনো ফলপ্রসূ উদ্যোগ নেয়নি। গতকাল রাতে সিটি করপোরেশনের কন্ট্রোল রুমে ফোন দিয়ে জানানোর পরও কোনো লাভ হয়নি।
রাজারবাগ মোড়ে বলাকা পরিবহনের চালক জনি জানান, দুপুর ১২টায় সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে রওনা হয়ে দুপুর দেড়টার দিকে খিলগাঁও ফ্লাইওভার এলাকা অতিক্রম করতে পারেননি। মগবাজার, মহাখালীগামী যাত্রীরা যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে বাসাবো, রাজারবাগ এলাকায় নেমে যান।
রাজধানীর বসিলা চৌরাস্তা থেকে হাজারীবাগ, ইসলামবাগের সড়কটির অবস্থা আরও বেহাল হয়েছে বৃষ্টিপাতে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পিয়াল হাসান বলেন, আমি গাবতলী থেকে দ্রুত সময়ে ক্যাম্পাসে যেতে বেড়িবাঁধ সড়কটি ব্যবহার করি। এমনিতে খোঁড়াখুঁড়িতে সড়কটি বেহাল। আজকে বৃষ্টির পর সড়কটির অবস্থা আরও শোচনীয়। আমার চোখের সামনেই দু-তিনটি ইজিবাইক উল্টে গেছে।