আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমায় দেশে সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১ টাকা ও পাম তেলের দাম লিটারে ১৯ টাকা কমানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। কমিশন বলছে, ভোজ্য তেলের বর্তমান মূল্য পরিস্থিতি বিবেচনায় স্থানীয় পরিশোধনকারীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে নতুন করে মূল্য নির্ধারণ করা প্রয়োজন।
সরকারি এ সংস্থার তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম মাত্র ০.৭ শতাংশ বেড়েছে, অন্যদিকে পাম তেলের দাম ৩ শতাংশ কমেছে। ২০২৫ সালের ১৫ এপ্রিল ফ্রি অব বন্ড মূল্যে অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলের দাম ছিল যথাক্রমে প্রতি টন ১ হাজার ৩ ও ১ হাজার ৫২ মার্কিন ডলার। তিন মাস পর এ দাম দাঁড়ায় যথাক্রমে ১ হাজার ৭৯ ও ১ হাজার ১৭ ডলারে। তবে স্থানীয় ভোজ্য তেল পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিন তেলের দাম কিছুটা বেড়েছে এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে নানা সংকটের কারণে তারা দাম কমাতে প্রস্তুত নন। তাদের মতে, পাম তেলের মূল্য কিছুটা কমলেও তা তুলনামূলকভাবে সীমিত এবং দাম কমানোর যথাযথ কারণ নেই। সরকার সর্বশেষ ১৫ এপ্রিল সয়াবিন তেলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১৪ টাকা বাড়িয়ে প্রতি লিটার ১৮৯ টাকা নির্ধারণ করে, যা আগে ছিল ১৭৫ টাকা। খোলা সয়াবিন ও পাম তেলের খুচরা মূল্য ১২ টাকা বাড়িয়ে ১৬৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়, যা আগে ছিল ১৫৭ টাকা। পাঁচ লিটারের বোতলজাত তেলের মূল্যও ৭০ টাকা বাড়িয়ে ৮৫২ টাকা থেকে ৯২২ টাকায় নির্ধারিত হয়। দেশে প্রতি বছর ২৫ থেকে ৩০ লাখ টন ভোজ্য তেলের চাহিদা রয়েছে, যার মধ্যে ৯৫ শতাংশের বেশি আমদানি-নির্ভর। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ২৩ লাখ টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করা হয়েছে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে। এদিকে, সরকার রাইস ব্রান তেলের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ এবং বর্তমানে আরোপিত ২৫ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটি পুনর্নির্ধারণের উদ্যোগ নিচ্ছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে স্থানীয় বাজারে সরবরাহ বাড়াতে রাইস ব্রান তেলের রপ্তানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে সরকার। বর্তমানে দেশে ১৭টি রাইস ব্রান অয়েল মিলস রয়েছে, যাদের বার্ষিক উৎপাদন সক্ষমতা ১৬ দশমিক ৩ লাখ টনের বেশি।
দেশে বর্তমানে প্রায় ৩ দশমিক ৪৩ লাখ টন অপরিশোধিত রাইস ব্রান তেল উৎপাদিত হয়, যা বাড়িয়ে ৫ দশমিক ১৪ লাখ টন পর্যন্ত নেওয়া সম্ভব বলে জানিয়েছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।