সম্প্রতি পাবনার প্রাণ ডেইরির একটি গ্রামীণ শিশুখাদ্য সংগ্রহ কেন্দ্রে ডিটারজেন্ট মেশানো দুধ শনাক্ত হয়েছে। ঘটনাটিকে পরিকল্পিত নাশকতা বলে দাবি করেছে প্রাণ ডেইরি। গতকাল প্রাণ ডেইরির প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা জানায়, ঘটনার পর পরই আমরা কেন্দ্রটি সাময়িক বন্ধ করে কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, একটি দুধ সরবরাহকারী চক্র- যারা দীর্ঘদিন ধরে নিম্নমানের দুধ দিয়ে প্রাণ ডেইরির চেইনে ঢোকার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। তারা কৌশলে আমাদের তিন কর্মীকে হাত করে ডিটারজেন্ট মিশ্রিত দুধ কেন্দ্রের ভিতরে প্রবেশ করিয়েছে। পরে তারা নিজ উদ্যোগে প্রশাসনকে খবর দেয়- যাতে আমাদের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়। ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত সন্দেহে তিন কর্মীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে প্রাণের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইলিয়াছ মৃধা এসব তথ্য জানান। এ সময় প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের জনসংযোগ প্রধান তৌহিদুজ্জামান, প্রাণ ডেইরির হেড অব মার্কেটিং সৈয়দ মুস্তায়িন কাদেরসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রাণ ডেইরির প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মাকসুদুর রহমান জানান, গুণগতমানের সমস্যা ধরা পড়ায় ছাইকোলার কিছু সরবরাহকারীর কোড স্থায়ীভাবে বাতিল করা হয়েছিল। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তারা দীর্ঘদিন ধরে প্রাণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালাচ্ছিল। ৭ মার্চ এ একই চক্র প্রাণ ডেইরির একজন কর্মকর্তাকে শারীরিকভাবে আক্রমণ করে। দুধ না নিলে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় মামলা হয়। প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের বিপণন পরিচালক কামরুজ্জামান কামাল বলেন, প্রাণ দুধ প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে চার ধাপে কঠোর মান পরীক্ষার মধ্য দিয়ে দুধ প্রক্রিয়াজাত করে। প্রথম ধাপে গ্রামীণ দুধ সংগ্রহ কেন্দ্রে মিল্ক এনালাইজারের মাধ্যমে ফ্যাট, এসএনএফ ও ডেনসিটি টেস্ট হয়। দ্বিতীয় ধাপে মাদার হাবে গিয়ে কেমিক্যাল, সোডা, তেল, ডিটারজেন্ট, সল্ট, ফরমালিন, পিএইচসহ ১৪ ধরনের পরীক্ষা হয়।
এরপর নরসিংদীর কারখানায় পৌঁছালে আরেক দফা পরীক্ষা করা হয় এবং প্যাকেটজাত হওয়ার আগে ল্যাব টেস্টে চূড়ান্ত মান নিশ্চিত করা হয়। তাই প্রথম ধাপে ভেজাল ধরা না পড়লেও পরের ধাপগুলোতে তা নিশ্চিতভাবে ধরা পড়ে এবং নষ্ট করা হয়।