গণ অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে এক বছরে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) ১৯.১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) এ তথ্য জানিয়েছে। সংস্থাটি জানায়, সাধারণত বড় ধরনের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর বিদেশি বিনিয়োগ হ্রাস পায়, কিন্তু বাংলাদেশ এ ধারায় একমাত্র ব্যতিক্রম হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত অর্থনৈতিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশে গণ অভ্যুত্থান-পরবর্তী প্রথম বছরে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (এফডিআই) ১৯ দশমিক ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বৈশ্বিক প্রবণতার সম্পূর্ণ বিপরীত অর্থনৈতিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বিশ্বব্যাংকের ডেটা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বে যেসব দেশে গণ অভ্যুত্থান হয়েছে, সেসব দেশে পরবর্তী এক বছরে এফডিআই উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। উদাহরণস্বরূপ, এ একই সময়ে শ্রীলঙ্কায় (২০২২ সালের পর) এফডিআই কমেছে ১৯.৪৯ শতাংশ, চিলিতে (২০১৯ সালের পর) কমেছে ২৫.৬৮ শতাংশ, সুদানে (২০২১ সালের পর) ২৭.৬০ শতাংশ, ইউক্রেনে (২০১৪ সালের পর) ৬১.২১ শতাংশ, মিসরে (২০১১ সালের পর) ১০৭.৫৫ শতাংশ এবং ইন্দোনেশিয়ায় (১৯৯৮ সালের পর) ১৬১.৪৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে এফডিআই বেড়েছে। এটা দেশের অর্থনীতির স্থিতিশীলতার এবং বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশের প্রতি আন্তর্জাতিক মহলের গভীর আস্থার প্রতিফলন।
এ প্রসঙ্গে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় গুণ হলো শত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বাউন্স ব্যাক করার অদ্ভুত ক্ষমতা। এ পরিসংখ্যান এর দারুণ একটা প্রতিফলন। সঠিক ইকোনমিক পলিসি সেট করা থেকে শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর আন্তরিকতা, আমাদের বেসরকারি খাতের অদম্য স্পৃহা ও সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এটা সম্ভব হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় বিনিয়োগকারীদের সাহায্য করার আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। সব সমস্যার সমাধান অবশ্য হয়নি। কিন্তু সদিচ্ছার কোনো ত্রুটি ছিল না। আমরা শিগগিরই আমাদের সারা বছরের একটা আমলনামা (রিপোর্ট কার্ড) প্রকাশ করব।’