অধস্তন আদালতের প্রায় ১ হাজারের বেশি বিচারককে পদোন্নতির প্যানেলভুক্তির প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতিদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত ফুল কোর্ট সভা। এর মধ্যে প্রায় ৩০০ জন অতিরিক্ত জেলা জজকে জেলা জজ পদে পদোন্নতির জন্য প্যানেলভুক্ত করা হয়েছে। জেলা জজ পদ ছাড়াও সিনিয়র সহকারী জজ থেকে যুগ্ম জেলা জজ, যুগ্ম জেলা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা জজ পদে পদোন্নতি পাবেন প্যানেলভুক্ত বিচারকরা। বৈঠকের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
গতকাল সুপ্রিম কোর্টের কনফারেন্স রুমে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে আপিল ও হাই কোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র জানায়, বেলা ৩টা থেকে পৌনে ৫টা পর্যন্ত ওই সভা চলে।
সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ থেকে জেলা ও দায়রা জজ পদে ৩৪৫ জনকে পদোন্নতির প্যানেলভুক্ত করার প্রস্তাব আসে ফুল কোর্ট সভায়। তাদের মধ্যে ২৬৫ জনের বিষয়ে প্রস্তাব অনুমোদন হয়েছে। এ ছাড়া যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ থেকে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং সিনিয়র সহকারী জজ থেকে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ, এ দুটি পদে সাত শতাধিক বিচারককে পদোন্নতির প্যানেলভুক্ত করার প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এ সভায়। সূত্র আরও জানায়, সভায় ২০২১ সালে সুপ্রিম কোর্টের প্রশাসনিক আদেশে বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া ঢাকার সপ্তম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের তৎকালীন বিচারক বেগম মোছা. কামরুন্নাহারের বিষয়টিও ফুল কোর্ট সভায় ওঠে। সভা সূত্র জানায়, প্রশাসনিক আদেশে তার বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়, রিভিউর পরিপ্রেক্ষিতে ওই সিদ্ধান্ত স্থগিত হয়েছে। সভায় আলোচনা শেষে প্রশাসনিক দিকটি খতিয়ে দেখার জন্য বিষয়টি জিএ (জুডিশিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। জিএ কমিটি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।
আলোচিত রেইনট্রি হোটেলে ধর্ষণ মামলায় ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর বিচারক মোছা. কামরুন্নাহার রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় তিনি পুলিশকে ঘটনার ৭২ ঘণ্টা পর ধর্ষণের মামলা না নেওয়ার কথা বলেন। এরপর সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনা করে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ওই বিচারককে আদালতে না বসার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে বিচারক মোছা. কামরুন্নাহারের বিচারিক ক্ষমতা সাময়িকভাবে প্রত্যাহার করে তাকে আইন মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগে সংযুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়।