চট্টগ্রাম নগরের দামপাড়া এলাকার এক বৃদ্ধের শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মিলছে। এ ঘটনায় নগরের সাতটি ও জেলার ছয়টি এলাকার ১৩টি বাড়ির প্রায় ৪০টি পরিবার লকডাউন করেছে প্রশাসন। সঙ্গে আছে ওই বৃদ্ধ চিকিৎসা নেওয়া বেসরকারি হাসপাতালটিও। প্রশাসন বলছে, ওই বৃদ্ধের মেয়ে ও মেয়ের শ্বাশুড়ি গত ১২ মার্চ ওমরা হজ্ব পালন করে আসেন। এই দুই নারী থেকে আক্রান্ত রোগী সংক্রমিত হয়েছেন বলে ধারণা। এই ১৩টি বাড়ির লোকজন গত ১৪ দিনের মধ্যে আক্রান্ত ওই রোগী ও দুই নারীর সংস্পর্শে এসে সংক্রমিত হওয়ার শঙ্কায় প্রশাসনের এ উদ্যোগ।
এভাবে বিদেশ ফেরত আসা প্রবাসীরা সরকারি নির্দেশনা ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন না মানায় এমন অবস্থা হয়েছে বলে মনে করছে স্বাস্থ্য ও জেলা প্রশাসন। কার্যতঃ এসব বিদেশ ফেরতরাই এখন ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছেন পুরো চট্টগ্রামে। ফলে চট্টগ্রামে চরমভাবে ঝুঁকি বাড়াচ্ছে বিদেশ ফেরতরা। আতঙ্ক বিরাজ করছে সকলের মধ্যে।
চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ১ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে ৩৯ হাজার ২৮৩ জন প্রবাসী বিভিন্ন দেশ থেকে আসেন। কিন্তু এর মধ্যে ‘ঠিকানা ও অবস্থান চিহ্নিত বিদেশ প্রত্যাগত ব্যক্তি’ এবং সরকারি নির্দেশনা মেনে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন করছেন মাত্র ৯৭৩ জন। বাকি ৩৮ হাজার ২৮৩ জন প্রায়ই নিয়ন্ত্রণহীন ছিলেন বলেও অভিযোগ আছে। বর্তমানে হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৩৫৩ জন।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘বিদেশ ফেরতদের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীর সদস্য, জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা, পুলিশ, র্যাবসহ সবাই অক্লান্ত চেষ্টা করেছেন। তাছাড়া বিদেশ ফেরত অনেকেই তথ্য গোপনও করার খবরও আসছে। ফলে বিষয়টি এখন জটিল আকার ধারণ করছে। এখন একজনের অসচেতনতার খেসারত আমাদের সবাইকেই দিতে হচ্ছে। এখন ওই বৃদ্ধের সঙ্গে দূরতমও যাতের সম্পর্ক ছিল, এমন সবার বাড়িই লকডাউন করা হয়েছে।’
জানা যায়, বর্তমানে চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসায় সেবাকেন্দ্র আছে ১৭টি, এসব কেন্দ্রের শয্যা আছে ২ হাজার ৩৮৬টি, কোভিড-১৯ চিকিৎসায় প্রস্তুতকৃত শয্যা আছে ৩১৫টি, চিকিৎসক আছেন ৬৭৩ জন, নার্স ৯০৫ জন, ব্যাক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) আছে চার হাজার ১৮টি, এর মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে দুই হাজার ৬৭৮টি। তাছাড়া আক্রান্তদের পরিবহনে সরকারি-বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স আছে ২৪টি। অন্যদিকে, আইসিইউ আছে নগরের এমন ১২টি বেসরকারি হাসপাতালকে চার পর্যায়ে বিভক্ত করে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার