কভিড-১৯ করোনাভাইরাসের কারণে দিশেহারা নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও ও বন্দর উপজেলায় বসবাসরত বেদে সম্প্রদায়ের শতাধিক পরিবার। প্রায় ১৫ বছর ধরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও ও বন্দর উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবাস করে আসছেন তারা। সরেজমিনে বেদে সম্প্রদায়ের বসবাস স্থলে গিয়ে দেখা গেছে তাদের জীবনযাপনের করুণ চিত্র।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার আনন্দ বাজার ও বৈদ্যেবাজার এলাকায় মেঘনা নদী পাড়ে ৩০টি পরিবার রয়েছে। এদিকে বন্দর উপজেলার লাঙ্গলবন্দ ব্রহ্মপুত্র ও মারিখালি নদীর তীরবর্তী এলাকায় ৪৫টি পরিবার বসবাস করেন। তারা পরিবার খোলা আকাশের নিচে তাবু টাঙ্গিয়ে বসবাস করছেন। করোনাভাইরাসের প্রভাবে তাদের সব রুটি রুজি বন্ধ। ছেলেমেয়ে নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে দিন যাপন করতে হচ্ছে। বেদে সম্প্রদায়ের লোকের ওপর ত্রাণ সহায়তার কোন প্রভাব পড়েনি।
বেদে সম্প্রদায়ের রাজিয়া বলেন, ভাল নেই, আমরা গরীব ঘরের সন্তান, ঠিকমত দু-বেলা খেতে পারি না। বেদে সম্প্রদায়ে জন্মগ্রহণ করা যেন একটি অভিশাপ। সারা দেশজুড়ে কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে সরকার ও বিত্তশালী লোকজন। শুধু আমরা কেন বঞ্চিত হলাম। আমাদের বেদে সম্প্রদায়ের লোকজনের পাশে অদ্যবদি কেউ ত্রাণ সহায়তা নিয়ে আসেনি। বঞ্চনা আর অবহেলাই যেন বেদে সম্প্রদায়ের মানুষদের নিত্য সঙ্গী। করোনাভাইরাসের কারণে আয় উপার্জন না থাকায় আমাদের জীবন ব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক অবস্থায় ঠেকেছে।
বেদে সম্প্রদায়ের শাকিলা বলেন, আমাদের কোন ব্যাংক হিসেব নেই। প্রতিদিনের রোজগার প্রতিদিন করে খেতে হয়। অনেক দিন ধরে কাজকর্ম বন্ধ থাকায় আমরা এখন দিশেহারা।
এ ব্যাপারে বেদে সর্দার আবু তাহের বলেন, আমাদের দিকে কেউ সাহায্যের হাত বাড়ায় নাগো ভাই। আমরা অনেক কষ্ট করিয়া জীবন অতিবাহিত করিতাছি। তবে হুনছি (শুনছি) সরকার নাকি আমাদের জন্যও চাল, ডাল দেবার কথা বলছে। কিন্তু কেউ তো আর দিল না আমাদের।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, আমি খোঁজ নিয়ে বেদে সম্প্রদায়ের সাহায্যের ব্যবস্থা করব।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা