বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে আশুলিয়ার অন্তত ৬টি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। সকালে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক বন্ধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। পুলিশ ও শ্রমিকরা জানায়, দুই মাসের বেতন এবং অন্যান্য পাওনা পরিশোধ না করেই কারখানা বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এর আগে আন্দোলন দমাতে কারখানা কর্তৃপক্ষ কয়েক ধাপে শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া পরিশোধ করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিল। তারা বেতন দেওয়ার তারিখও নির্ধারণ করে নোটিশ দেয়।
শ্রমিকরা সকাল আটটার দিকে তারা আশুলিয়ার সিএন্ডবি সড়কে অবস্থান নেন এবং বিক্ষোভ করেন। এসময় যান চলাচল বন্ধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে শ্রমিকরা। শ্রমিকেরা জানান, গত মাসে কয়েক দফায় তাদের বেতন দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু দেয়-দিচ্ছি করে বেতন দেওয়া হয়নি। দীর্ঘদিন বেতন না পেয়ে তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বাসার মালিক ও দোকানিরা পাওনা টাকার জন্য তাদের চাপ দিচ্ছেন।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে তারা নতুন করে কোনো কাজও খুঁজে নিতে পারছেন না। এই অবস্থায় তাদের কেউ কোনো ধরনের ত্রাণ দিয়ে সহায়তাও করছেন না। এদিকে আশুলিয়ার আরও একটি কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। তাদের অভিযোগ বেতন না দিয়েই কারখানা বন্ধ করা হয়েছে এবং তিন শতাধিক শ্রমিককে ছাটাই করা হয়েছে। এ নিয়ে কারখানার মহাবস্থাপক বলেন, করোনায় লকডাউনের কারণে কারখানা বন্ধ থাকায় বর্তমানে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন তাই বেতন দিতে পারছেন না।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা মিছিল নিয়ে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেছেন। বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে কারখানার শ্রমিকরা। করোনায় লকডাউনের কারণে কারখানা বন্ধ থাকায় বর্তমানে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন তারা। শ্রমিকরা জানান, গত মাস থেকে কোনো বেতন ভাতা পাননি। কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন দেয়-দিচ্ছি করে তাদের ৩ মাসের বকেয়া পড়ে আছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দোকানদাররা তাদের বাকিতে খাদ্যদ্রব্য দিচ্ছে না। বাড়িওয়ালাও তাদের বাড়ি ভাড়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন।
এরকম ছয়টি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা পৃথকভাবে বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে। আশুলিয়ার থানার উপপরির্দশক (এস আই) মাজারুল ইসলাম বলেন, শ্রমিকদের বেতন ভাতা পরিশোধের আশ্বাসে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। মালিকপক্ষের সাথে কথা বলে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ করা হবে। বাংলাদেশ বস্ত্র ও পোশাক শিল্প শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি সাংগঠনিক সম্পাদক সরোয়ার হোসেন বলেন, করোনা সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে আশুলিয়ার লকডাউন চলছে। সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী এই সময়ে সাধারণ মানুষের ঘরে অবস্থানের কথা থাকলেও আশুলিয়ার চিত্র ভিন্ন। সাভার ও আশুলিয়ার রাস্তায় বিপুল সংখ্যক শ্রমিক দেখা গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা শিল্প পুলিশ-১ এর উপ-সহকারী পরির্দশক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে আছেন। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। বকেয়া বেতনসহ অন্যান্য নিয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক