বৃহস্পতিবার, ৯ জুন, ২০১৬ ০০:০০ টা

পাঁচ জেলায় নির্বাচনী সহিংসতায় আহত ৯৭, ভাঙচুর আগুন

প্রতিদিন ডেস্ক

পাঁচ জেলায় নির্বাচনী সহিংসতায় আহত ৯৭, ভাঙচুর আগুন

দেশের বিভিন্ন স্থানে ইউপি নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা অব্যাহত হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় হবিগঞ্জ, ফরিদপুর, গাইবান্ধা, ঝিনাইদহ ও বাগেরহাটে হামলা-সংঘর্ষ হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ও গতকালের এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন ৯৭ জন। ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে বহু বাড়িঘর-দোকানে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর—

হবিগঞ্জ : সদর উপজেলার গোপায়া ইউপির বিজয়ী ও পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন পুলিশের ওসি, এসআই ও ইউপি চেয়ারম্যানসহ অর্ধশত লোক। ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ করা হয় ২০/২৫ দোকানপাটে। মঙ্গলবার রাত ও গতকাল গোপায়া বাজারে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত ৩০ জনকে সদর হাসপাতালে ভর্ির্ত করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, বুধবার সকালে গোপায়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী বিজয়ী চেয়ারম্যান আক্তার হোসেনের সমর্থক কামরুলের সঙ্গে নির্বাচনী বিরোধ নিয়ে বাগবিতণ্ডা ও মারামারি হয় পরাজিত আওয়ামী লীগের প্রার্থী আবুল কালামের সমর্থক সুজনের। ফরিদপুর : নগরকান্দা উপজেলার চরযশোরদী ইউনিয়নের কুমারদিয়া গ্রামের অর্ধশতাধিক বাড়িঘর হামলা, লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। হামলায় আহত হয়েছেন ৩০ জন। এদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নির্বাচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী পথিক তালুকদারের কয়েকশ সমর্থক হামলা চালায় পরাজিত আওয়ামী লীগ প্রার্থী সাহেব ফকিরের সমর্থকদের বাড়িঘরে। লুটপাট করে মালামাল। নগরকান্দা থানার ওসি জানান, হামলার ঘটনায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা হয়েছে। আটক করা হয়েছে আটজনকে। গাইবান্ধা : ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউপির গলনারচরে মঙ্গলবার রাতে পরাজিত চেয়ারম্যান ও মেম্বার প্রার্থীর হামলায় চার পুলিশ সদস্য, নবনির্বাচিত ইউপি মেম্বরসহ ১১ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ ২৮ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় কয়েকজনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৫০০ জনের বিরুদ্ধে ফুলছড়ি থানায় গতকাল মামলা হয়েছে। গ্রেফতার আতঙ্কে গলনাচর গ্রাম পুরুষশূন্য হওয়ায় গতকালও ২০টি বাড়িঘরে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। ঝিনাইদহ : শৈলকুপা উপজেলার দুধসর ইউনিয়নে মঙ্গলবার রাতে ইউপি নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় ছয়জন আহত হয়েছেন। পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, দুধসর গ্রামের বজুল বিশ্বাস ও রিয়াজ বিশ্বাসের মধ্যে শেষ ধাপের ইউপি নির্বাচন নিয়ে বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে মঙ্গলবার রাতে বজলু বিশ্বাস, রিয়াজ বিশ্বাসের সমর্থক ফারুক বিশ্বাসের চায়ের দোকানে হামলা চালায়। এতে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এদিকে শৈলকুপা উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নে সাবেক মেম্বার আনোয়ার হোসেন ও নবনির্বাচিত মেম্বার নজরুল ইসলাম বিরোধ এখন তুঙ্গে। গত ২০১৫ সালে মির্জাপুর ইউনিয়নের বড়দা গ্রামের আব্দুর রশিদ নামে একজন নিহত হন। এ ঘটনায় শওকত বিশ্বাস নামে একজন বাদী হয়ে বর্তমান মেম্বার নজরুল ইসলামসহ ৪৫ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। শেষ ধাপের ইউপি নির্বাচনে তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর সাবেক মেম্বার আনোয়ার হোসেন ও তার কর্ম-সমর্থকদের বাড়ি-ঘরে হামলা, কর্মী-সমর্থককে মারধর করে আহত ও হত্যা মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া তার প্রায় ১ একর জমির কাঁচা আবাদী কলা জোরপূর্বক কেটে বাজারে বিক্রি করে দিচ্ছে। এ নিয়ে এলাকায় টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। বাগেরহাট : মোল্লাহাটে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হামলা, বসতঘর ভাঙচুর ও লুটপাট অব্যাহত রয়েছে। মঙ্গলবার রাতেও আস্তাইল গ্রামের পাঁচটি বাড়িতে তাণ্ডব চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে ২০টি বসতঘর ও দোকান ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। থানায় মামলা হওয়ায় পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে আস্তাইল গ্রাম। আতঙ্কে রয়েছেন নারী-শিশুরাও। বগুড়ায় মামলা : সদর উপজেলার রাজপুর ইউনিয়নে নির্বাচনী বিরোধের জেরে বাড়িঘরে হামলা, লুট ও ভাঙচুরের ঘটনায় ২০ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা হয়ছে। অভিযোগকারী ইয়াকুব আলী জানান, গত রবিবার রাতে ঘুমন্ত মানুষের ওপর হামলা করেছে আসামিরা। অভিযোগ দেওয়ার পর তারা নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে।

সর্বশেষ খবর