বৃহস্পতিবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

চাঁদাবাজি করতে গিয়ে মার খেলেন চার ডিবি পুলিশ

মাহবুবুর রহমান, শ্রীপুর (গাজীপুর)

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় চাঁদা চাইতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের মারধরের শিকার হয়েছেন ডিবি পুলিশের চার সদস্য ও এক সোর্স। এ সময় ব্যবসায়ীরা তাদের দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয় পুলিশ সদস্যদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাসে। চৌরাস্তার পল্লী বিদ্যুৎ মোড়ে আল আমিন মুড়ি মিলে গতকাল সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। মারধরের শিকাররা হলেন— গাজীপুর ডিবি পুলিশের এসআই খায়রুল ইসলাম, এএসআই মাহবুবুর রহমান, দুই কনস্টেবল ও এক সোর্স। আল আমিন মুড়ি মিলের মালিক আবুল কালাম বলেন, ‘কয়েকদিন আগে ডিবি পুলিশের ওই সদস্যরা তার মিলে মুড়ির সঙ্গে সার মেশানোর অভিযোগ এনে সাত লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। অন্যথায় মামলা দিয়ে হয়রানি, ক্রসফায়ারে হুমকি দেন। পরে দুই লাখ টাকা দিয়ে তাদের কাছ থেকে সাময়িক রক্ষা পাই। পরবর্তীতে আরও টাকা দাবি করে হুমকি দেয়।’ তিনি জানান, ওই ঘটনা সব ব্যবসায়ীকে জানালে তারা ঐক্যবদ্ধ হন। এরই মধ্যে বুধবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে ডিবি পুলিশের সদস্যরা চাঁদার বাকি টাকার জন্য মিলে আসেন। এ সময় ব্যবসায়ীরা জড়ো হয়ে কাউকে কোনো চাঁদা দেবে না বলে জানিয়ে দেন। তখন পুলিশ কয়েকজনকে আটক করে নিয়ে যেতে চাইলে ব্যবসায়ীরা তাদের ওপর হামলা করে। পরে টায়ার জ্বালিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ এবং ভাঙচুর করে পুলিশের ব্যবহৃত মাইক্রোবাস। শ্রীপুর থানার সহকারী পুলিশ সুপার তোফাজ্জল হোসেন ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে এক ঘণ্টা পর তারা অবরোধ তুলে নেন। গাজীপুর ডিবি পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমির হোসেন বলেন, ‘এটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। কারও বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তা আমলে নেওয়া হবে।’ সহকারী পুলিশ সুপার তোফাজ্জল হোসেন জানান, রাত সাড়ে ৮টায় অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে ডিবি পুলিশের সদস্যদের উদ্ধার করা হয়। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ : শ্রীপুরের বারতোপা গ্রামের মমিন ফিড মিলের মালিক সাইজুদ্দীন বলেন, ‘গত ১ জানুয়ারি গাজীপুর ডিবি পুলিশের এসআই কিবরিয়া তার ফিড মিলে গিয়ে লাইসেন্সসহ অন্য কাগজপত্র দেখতে চান। সেগুলো দেখানোর পরও পুলিশ আমাকে খোঁজাখুঁজি করে। আমার আট বছরের শিশুপুত্র মমিনুলকে ধরে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। পরে মিলের শ্রমিক বাবুল হোসেনকে তুলে নিয়ে তাকে মুক্তির জন্য পাঁচ লাখ টাকা চায়। দেড় লাখের বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দেয়। একই দিন একই গ্রামের জাহিদ ফিড মিলের কাগজপত্র দাবি করে। সেগুলো দেখানোর পর কাগজপত্রের স্বল্পতার অভিযোগ এনে জাহিদকে ধরে নিয়ে যায়। ৭২ হাজার টাকার বিনিময়ে ছাড়া পান তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর