শুক্রবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

৪৪ বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ১৫টিতে গাছতলায় পাঠদান

ঝিনাইদহ

শেখ রুহুল আমিন, ঝিনাইদহ

ঝিনাইদহের ৬টি উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৮৯৬টি। এর মধ্যে ৪৪টি বিদ্যালয় ভবন ঝুঁকিপূর্ণ এবং ১৫টিতে ক্লাস চলে খোলা আকাশের নিচে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো ধসে যে কোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। অন্যদিকে খোলা মাঠে পাঠদানের কারণে শিক্ষার্থীরা অমনোযোগী হয়ে পড়ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার শহীদ মোশারফ হোসেন প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টির পাকা ভবন নির্মাণ করে এলজিইডি। নির্মাণকাজ নিম্নমানের হওয়ায় কিছু দিন যেতে না যেতেই ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরে। ছাদ থেকে কনক্রিটের পলস্তারা ভেঙে পড়তে থাকে। এরপর প্রকৌশল বিভাগ থেকে স্কুলভবন ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। যে কারণে একটি শ্রেণিকক্ষে সব শ্রেণির শিক্ষার্থী একত্রিত করে পাঠদান করা হচ্ছে। ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় নিজেদের তৈরি টিনশেডের নিচে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে সদর উপজেলার ডাকাতিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। স্থানসংকুলান না হওয়ায় চলছে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান। এমনিভাবে পাঠদান করা হচ্ছে সদর উপজেলার পুটিয়া, লৌহজঙ্গা, ডাকাতিয়া ও পোড়াবেতাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। হরিণাকুণ্ডু উপজেলার পার্বতীপুর, সনাতনপুর, মান্দিরা, তোলা, ভবানীপুর, সাবেক নিত্যানন্দপুর, ২০ নম্বর দৌলতপুর, পারদখলপুর, রঘুনাথপুর, লালন শাহ, নারায়ণকান্দি, তেলটুপিবাজার, বাগআঁচড়া, জোড়াদাহ, ধুলিয়া, অনির্বাণ ও খলিসাকুণ্ডু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থা নাজুক। কালীগঞ্জ উপজেলার চাঁপালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের ছাদ ধরে রাখতে বাঁশের খুঁটি লাগানো হয়েছে। এ অবস্থায় খোলা আকাশের নিচে ক্লাস নিতে হচ্ছে। ১৯৯৬ সালে নির্মিত একমাত্র ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। উপজেলা প্রকৌশল কার্যালয়ের কর্মকর্তারা সরজমিনে দেখে ভবনটিতে ক্লাস না করার পরামর্শ দিয়েছেন। এ ছাড়া কালীগঞ্জের নরেন্দ্রপুর ঘোষনগর, কাশিপুর, মথনপুর ও নিয়ামতপুর বিদ্যালয়ে পাঠদান ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। অন্যদিকে শৈলকুপা উপজেলার বন্দেখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান চলছে পাশের একটি লিচুবাগানে। শিক্ষার্থীরা চট বিছিয়ে বসে শিক্ষা নেয়। বৃষ্টি হলে স্কুল ছুটি হয়ে যায়। শাহী মসজিদ, জিকেএইচ, গোলকনগর, মান্দারিপাড়া, রূপদাব্যাসপুর, রতনপুর, দক্ষিণ মনোহরপুর, পূর্ব বসন্তপুর, শাহাবাড়িয়া, কবিরপুর, ব্রহ্মপুর, বাহাদুরপুর ও গোবিন্দপুর বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের অবস্থা নেই। কোটচাঁদপুর উপজেলার সারুটিয়া, চতুরপুর ও সিঙ্গিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাদসহ দেয়াল খসে খসে পড়ছে। অনেক বিদ্যালয়ে টিউবয়েল ও টয়লেট নেই। অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের অন্য স্কুলে নিয়ে যাচ্ছেন। যে কারণে স্কুলের শিক্ষার্থী দিন দিন কমে যাচ্ছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান বলেন, জেলার ঝুঁকিপুর্ণ বিদ্যালয়গুলোয় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যালয়গুলো পুনর্নির্মাণ ও সংস্কারের জন্য উপর মহলকে জানানো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর