রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

জলাবদ্ধতায় ‘পতিত’ হাজার হাজার হেক্টর জমি, দুশ্চিন্তায় কৃষক

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খনন, খাল-জলাশয়ের মুখ ভরাটের কারণে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ থাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ ও সলঙ্গার হাজার হাজার হেক্টর জমিতে। এ সব জমিতে চলতি মৌসুমে রবি ফসল চাষ করতে না পারায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য খাল-জলাশয় সচল রাখার দাবি জানিয়েছেন তারা। না হলে আগামী ধান আবাদও হুমকিতে পড়তে পারে কৃষকরা রয়েছেন এমন দুশ্চিন্তায়।

জানা যায়, শস্যভাণ্ডার খ্যাত চলনবিল অধ্যুষিত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ ও সলঙ্গা। ফসলের ন্যায্য দাম না পাওয়ার অজুহাতে কয়েক বছর ধরে কতিপয় কৃষক জমি কেটে অপরিকল্পিতভাবে পুকুর খনন করেছেন। আবার প্রভাবশালীরা খাল-জলাশয়-নয়নজুলি দখল করে বসতভিটা নির্মাণ করছেন। এছাড়া উজানে নাটোরের সিংড়া ও ভাটিতে পাবনার চাটমোহরে সুতিজাল দিয়ে পানি প্রবাহের গতি রোধ করা হচ্ছে। তার ওপর এবার পরপর দুই বারের বন্যা ও অতিবৃষ্টির কারণে সময়মতো পানি নিষ্কাশন হতে না পারায় এ অঞ্চলের হাজার হাজার হেক্টর জমি জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। কৃষক মুনজুর হাজী জানান, যত্রতত্র জমির মধ্যে পুকুর কেটে পানি নিষ্কাশন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগে যে সব খাল দিয়ে পানির প্রবাহ ছিল সেসব খাল দখল করে বসতবাড়ি নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে জমি থেকে পানি বের হতে পারছে না। এ অবস্থায় রবি আবাদ-তো দূরের কথা আগামীতে ধান চাষ নিয়েও শঙ্কায় রয়েছি। জুলমাত আলী জানান, প্রতিবছর সরিষা আবাদ করে সেই ফসল বিক্রির অর্থ দিয়ে ধান লাগানো হয়। এবার জলাবদ্ধতার কারণে সরিষা চাষ করা সম্ভব হয়নি। এতে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করলে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হবে।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, এ বছর অর্ধেক জমিতে সরিষা আবাদ না হওয়ায় কৃষকের বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে। জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছে। মাঝেমধ্যে পুলিশ নিয়ে গিয়ে খালের ভরাটমুখ খুলে দিচ্ছে। বর্তমানে প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া পুকুর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পানি নিষ্কাশনে যাতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয় এ জন্য প্রশাসনের পাশাপাশি জনগণ ও জমিমালিকদের সচেতন হতে হবে।

সর্বশেষ খবর