উত্তর জনপদের ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ দিনাজপুর সরকারি কলেজ। প্রতিষ্ঠার ৭৮ বছর পেরিয়ে গেলেও কলেজটিতে রয়ে গেছে নানা সমস্যা। সংকট রয়েছে শিক্ষকসহ কর্মকর্তা-কর্মচারীর। দীর্ঘদিনে গড়ে ওঠেনি প্রয়োজনীয় অবকাঠামোও। নেই পরিবহন ব্যবস্থা, ল্যাব অ্যাটেনডেন্ট। প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে আছে মাত্র ৭০০ আসনের ছয়টি ছাত্রাবাস। পুরাতন প্রশাসনিক ভবন, অডিটোরিয়ামে সংস্কার করেই কাজ চলে। শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা-শিক্ষকের ১৫০টি পদ থাকলেও কর্মরত আছেন ১১৮ জন। শিক্ষার্থী অনুপাতে শিক্ষকের আরও পদ সৃষ্টি করে পদায়ন প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
শহরের সুহারীতে অবস্থিত দিনাজপুর সরকারি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের ক্লাস করতে হয় ক্যাম্পাস থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে বালুবাড়ীতে। এক জায়গায় ক্লাস, আরেক জায়গায় অন্যান্য শিক্ষা কার্যক্রম চলায় নানা বিড়ম্বনায় পড়তে হয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের। বিসিএস ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্তরা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত এবং সময়মতো পদোন্নতি না হওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে শিক্ষকদের মধ্যে। শিক্ষার্থীরা জানান, সরকারি কলেজে দ্বিতল ভবনের লাইব্রেরিতে রয়েছে ২২ হাজার ৭১৬টি বই। ১০০ আসনের লাইব্রেরি হলেও কলেজ চলাকালে শুধু এটি খোলা থাকে। ক্লাসের বই ছাড়া অন্য বই পড়ার সুযোগ নাই বা দেওয়া হয় না। বেশিরভাগ বিভাগে সেমিনার কক্ষ নেই। কোথাও থাকলেও সেটি অব্যবহৃত। শিক্ষকরা জানান, কলেজে পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। শ্রেণিকক্ষ সংকট রয়েছে। কলেজ ক্যাম্পাস থেকে তিন কিলোমিটার দূরে বালুবাড়ীতে কলেজের আরেকটি নিজস্ব ভবনে উচ্চ মাধ্যমিক ক্লাস নিতে নিজ খরচে শিক্ষকদের যাতায়াত করতে হয়। শিক্ষকদের কমনরুম থাকলেও এর পরিধি বাড়ানো জরুরি। এই কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক (পাস) পর্যায়ে নিয়মিত পাঠদানসহ স্নাতক (সম্মান) পর্যায়ে ১৫, স্নাতকোত্তর প্রথম পর্বে ৮ এবং শেষ পর্বে ১৫টি বিষয়ে পাঠদানের ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে আরও শিক্ষকের পদ সৃষ্টি করে পদায়ন জরুরি হয়ে পড়েছে। উল্লেখ্য, দিনাজপুর সরকারি কলেজ ১৯৪২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। সরকারিকরণ হয় ১৯৬৮ সালে। কলেজে ছাত্রীদের তিনটি এবং ছাত্রদের তিনটি ছাত্রাবাস রয়েছে।