নাটোর, দিনাজপুর ও কুড়িগ্রাম জেলায় গত কয়েক দিনের বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে হাজার হাজার কৃষকের স্বপ্নের বোরো ধান। দ্রুত পানি নেমে না গেলে নষ্ট হয়ে যাবে তাদের কষ্টের ফসল। কীভাবে ধান রক্ষা করবেন এই চিন্তায় দিন কাটছে কৃষকদের। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
নাটোর : সুপার সাইক্লোন আম্ফান পরবর্তী ঝড়-বৃষ্টিতে চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের সিংড়া ও বড়াইগ্রাম উপজেলায় ধান ও ভুট্টার খেত পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। কৃষি বিভাগের হিসাব মতে, সিংড়ায় ৫০০ থেকে ৬০০ হেক্টর ও বড়াইগ্রামে ৬ হেক্টর জমির পাকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। এ ছাড়া সিংড়ায় প্রায় ৪৫ হেক্টর জমির ভুট্টা খেত চলে গেছে পানির নিচে। কৃষকদের দাবি, ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি। সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, বৃষ্টির পানি বিল থেকে বের হওয়ার জায়গা বন্ধ করে পুকুর খনন করায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে বড়াইগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইকবাল হোসেন জানান, উপজেলায় এ বছরে ৪ হাজার ৩০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৬ হেক্টর জমির ধান অতিরিক্ত বর্ষণের কারণে পানির নিচে তলিয়ে গেছে। দিনাজপুর : ফুলবাড়ী উপজেলার কয়েকশ বিঘা ধানের জমি তলিয়ে গেছে। আম্পান ও গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় উপজেলার খয়েরবাড়ী ও দৌলতপুর ইউপির ১০ গ্রামের কৃষকের নিম্নাঞ্চলের জমির ধান এখন পানির নিচে। তারওপর শ্রমিক সংকটের ফলে ফসল ঘরে তোলা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন এসব গ্রামের কৃষক। খয়েরবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের বলেন, কয়েক বছর থেকে পানি নিস্কাষনের পথ রোধ করে ঘোনাপাড়া মৌজায় পুকুর খনন করায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এটিএম হামিম আশরাফ বলেন, ওই এলাকার ৮০ হেক্টর জমির ধান তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে দুই দশমিক পাঁচ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম : উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল ও প্রবল বর্ষণে চরাঞ্চলের অধিকাংশ নিচু জমির পাকা বোরো ধান ও উঠতি পাটসহ অন্যান্য ফসল ডুবে গেছে। কৃষকরা কোমড় পানিতে নেমে বাধ্য হয়ে আধাপাকা ধান কাটছেন। এ দৃশ্য এখন জেলার অধিকাংশ চরের জমিতে দেখা যাচ্ছে। সদর উপজেলার দুধকুমর নদের পূর্ব পারে চরের কৃষক সামছুল হক জানান, কষ্টে ট্যাকা জমাইয়া এক বিঘা জমিত বোরো ধান নাগাছি। এবার খেতত ফলনও ভাল হইছে। কিন্তু কপাল খারাপ নদীর পানি সউগ শেষ করি দিল। একই অবস্থা সদরসহ জেলার বিভিন্ন চর এলাকার কৃষকের।