রবিবার, ৩১ মে, ২০২০ ০০:০০ টা

দেরি করে বসল আমের হাট

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

দেরি করে বসল আমের হাট

গত বছর মে মাসের শুরুতেই জমে উঠেছিল আমের হাট। এবার অন্তত ১৫ দিন দেরিতে রাজশাহীতে আমের হাট বসেছে। রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বাণেশ্বরে শুক্রবার থেকে বসছে এই হাট। এটিই রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের হাট। এবার আম পরিপক্ব হতে সময় বেশি লাগার কারণে হাটটি বসতে দেরি হলো। হাটে গিয়ে দেখা গেছে, ভ্যানের ওপর ঝুড়ি আর ক্যারেটে সাজিয়ে রাখা হয়েছে গুটি, রানীপছন্দ আর গোপালভোগ জাতের আম। তবে পুরো হাট এখনো ভরেনি। স্বল্প সংখ্যক ব্যবসায়ী হাটে আম তুলেছেন। হাটে যেমন বিক্রেতার সংখ্যা কম তেমনি কম ক্রেতার সংখ্যাও। তাই তুলনামূলক কম আমের দামও। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গুটি জাতের আম ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করা হচ্ছে। আর গোপালভোগ বিক্রি করা হচ্ছে ১ হাজার ৭০০ টাকা মণ দরে।

তবে আকারে একটু বড় গোপালভোগের দাম ব্যবসায়ীরা ২ হাজার টাকা পর্যন্ত চাইছেন। ১ হাজার ৮০০ থেকে ১ হাজার ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে সেসব আম। তবে হাটে হিমসাগর বা খিরসাপাত দেখা যায়নি। পুঠিয়ার শিবপুর এলাকার আম ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান জানালেন, চার-পাঁচ দিন আগে থেকে হাতে গোনা কয়েকজন ব্যবসায়ী তাদের ইজারা নেওয়া বাগান থেকে আম ভেঙে হাটে তুলছেন। শুক্রবারই সবচেয়ে বেশি আম উঠেছে হাটে। এখন প্রতিদিন আরও বেশি পরিমাণ আম উঠবে বলে মনে করছেন তিনি।

আরেক আম ব্যবসায়ী শরিফুল ইসলাম বলেন, এবার আম পরিপক্ব হতে একটু সময় লাগল বেশি। এর পরও করোনাভাইরাসের জন্য আম নামানোর সাহস পাচ্ছিলেন না তিনি। তবে শুক্রবার অল্প পরিমাণ আম এনেছেন তিনি। কিন্তু ক্রেতার সংখ্যা কম। তাই আমের দামও কম।

আমের ক্রেতা জুলফিকার রহমান বললেন, প্রতি বছরই আম কিনে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ঢাকায় পাঠানো লাগে। সে জন্য এবারও হাটে এসেছেন। তিনি বলেন, করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে ভিড় এড়িয়ে চলা খুব জরুরি। কিছুদিন পর হাটে ভিড় দেখা দিতে পারে। তাই তিনি আগেভাগেই আম কিনতে এসেছেন। আমের দাম নিয়ে অভিযোগ নেই বলেও জানান তিনি।

রাজশাহী জেলায় আমবাগান আছে ১৭ হাজার ৬৮৬ হেক্টর জমিতে। এবার আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ১০ হাজার মেট্রিক টন। অপরিপক্ব আম নামানো ঠেকাতে গেল চার বছরের মতো, এবারও আম নামানোর সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

সে অনুযায়ী গাছে পাকলেই ১৫ মে থেকে সব ধরনের গুটি আম নামানোর সময় শুরু হয়েছে। ২০ মে থেকে গোপালভোগ এবং ২৫ মে থেকে রানীপছন্দ ও লক্ষ্মণভোগ বা লখনা এবং ২৮ মে থেকে হিমসাগর বা খিরসাপাত নামানোর সময় শুরু হয়েছে। এ ছাড়া ল্যাংড়া ৬ জুন, আম্রপালি ১৫ জুন এবং ফজলি ১৫ জুন থেকে নামানো যাবে। সবার শেষে ১০ জুলাই থেকে নামবে আশ্বিনা এবং বারী-৪ জাতের আম।

করোনাকালে বাজারজাত নিয়ে যেন সমস্যা না হয়, সে জন্য এবারই প্রথম শুধু আমের জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ট্রেন চলবে। ট্রেনে দেড় টাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে এবং এক টাকা ৩০ পয়সা কেজি ভাড়ায় রাজশাহী থেকে আম ঢাকায় নেওয়া যাবে। ঢাকায় গিয়ে ব্যবসায়ীদের সুবিধামতো স্টেশনে আম নামানো হবে। কুরিয়ার সার্ভিসগুলোও আম পাঠাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর