বুধবার, ২১ এপ্রিল, ২০২১ ০০:০০ টা

নদীর প্রবাহ বন্ধ করে ভবন নির্মাণ

ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কাটায় হুমকিতে সেতু দুর্ঘটনার আশঙ্কা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

নদীর প্রবাহ বন্ধ করে ভবন নির্মাণ

সেতুর দুই অংশে এভাবে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি ভরাট করা হচ্ছে -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের কুন্ডা ইউনিয়নে একটি সেতুর দুই পাশ মাটি দিয়ে ভরাট করে পানি নিষ্কাশনে বাধাগ্রস্ত করার অভিযোগ উঠেছে প্রভাবশালী মহলের বিরুদ্ধে। সেতুর দুই পাশে মাটি ভরাট করে বাড়ি ও ধর্মীয় মক্তব বানানো হচ্ছে। ওই সেতুটি উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়নের বিটুই ও কাহেতুড়া গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে। অভিযোগের তীর কাহেতুড়া গ্রামের ৯ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মো. মলাই মিয়া, জাকির হোসেনসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে। জানা গেছে, উপজেলার কুন্ডা ইউনিয়নের বিটুই ও কাহেতুড়া গ্রামের ওই সেতুর নিচ দিয়ে মাটি দিয়ে পাড় তৈরি করে ভরাট করছে। কাহেতুড়া ৯ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য ও কয়েকজন প্রভাবশালী মিলে গত কয়েক দিন ধরেই মাটি ভরাটের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকাবাসী প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না। এতে এ এলাকার কৃষি জমির পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া সেতুর নিচ থেকে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি তোলে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ায় চরম হুমকিতে পড়েছে সেতুর কয়েকটি পিলার। স্থানীয়দের দাবি, যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। কাহেতুড়া গ্রামের অহিদ মিয়া বলেন, ইউপি সদস্য মলাই মিয়া সেতুর কাছে একটি ভবন করবে, তাই তিনি এক পাশ ভরাট করছেন। অপরদিকে জাকির মিয়া এক পাশ ভরাট করে বাড়ি করবেন। তাই তিনিও ভরাট করছেন। এ গ্রামের একমাত্র পানি নিষ্কাশনের স্থল হলো এই সেতুটি। এই সেতুর দুই পাশ মাটি দিয়ে বন্ধ করায় পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে। এমনকি কৃষিজমির হুমকিসহ নানা সমস্যার মুখে পড়বে কৃষকরা। কাহেতুড়া গ্রামের ইউপি সদস্য মলাই মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি আমার জায়গায় মাটি ফেলেছি। সেতুর নিচের জায়গা আমার পৈতৃক সম্পত্তি। আমি সেতুর কাছে একটি ভবন তৈরি করব। পানি প্রবাহ বন্ধ হয় এমন কাজ আমি করছি না। আরেক অভিযুক্ত মো. জাকির হোসেন জানান, আমি সেতুর আশপাশে একা ভরাট করছি না। বর্তমান মেম্বার সবার আগে পূর্বদিক ভরাট করছেন, তাই আমিও করছি। তিনি আরও জানান, আমি এখানে বাড়ি করব। এতে সেতুর নিচ ভরাট হলে সেতুর জন্য ভালো হবে। কুন্ডা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. ওয়াস আলী জানান, কুন্ডা ইউনিয়নে রাস্তার দুই পাশে কৃষিজমি নষ্ট করে গত তিন মাসে প্রায় ৫০টি পুকুর খনন করা হয়েছে। কাহেতুড়া গ্রামের কাছে একটি সেতুর দুই পাশে মাটি ভরাট করা হচ্ছে। মাসিক মিটিংয়ে আলোচনা করা হলে এখন পর্যন্ত কৃষিজমি ভরাট বন্ধ করা ও সেতুর দুই পাশ উদ্ধার করতে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, কুন্ডা ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তাকে বিষয়টি সম্পর্কে খবর নিতে বলেছি।

সর্বশেষ খবর