রবিবার, ৬ জুন, ২০২১ ০০:০০ টা

অবৈধ বালু উত্তোলনে হুমকির মুখে কৃষিজমি সড়ক স্থাপনা

নাটোর প্রতিনিধি

অবৈধ বালু উত্তোলনে হুমকির মুখে কৃষিজমি সড়ক স্থাপনা

নাটোরের নলডাঙ্গায় প্রশাসনের অবহেলায় অবৈধ বালু উত্তোলন করায় ঝুঁকিতে কৃষিজমি সড়ক ও স্থাপনা। প্রভাবশালী এ চক্রটি দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। প্রভাবশালী চক্রটি প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে মরা আত্রাই নদীর গভীর থেকে প্রতিদিন ট্রাকে ট্রাকে বালু উত্তোলন করছে। মরা আত্রাই নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করার কারণে কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সড়কসহ ৩টি গ্রামের ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি হুমকির মুখে পড়েছে। ভুক্তভোগীরা বালু উত্তোলন বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও ফল পাচ্ছে না। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সবার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। জানা গেছে, নলডাঙ্গা উপজেলার খাজুরা ফকিরপাড়া এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পড়েছে ফসলি জমি, বসতবাড়ি, মসজিদ। উপজেলা খাজুরা ফকিরপাড়া এলাকায় একই স্থানে  গত ৩-৪ বছর ধরে বালু উত্তোলন করছেন প্রভাবশালী চক্রটি। চক্রটি ড্রেজার মেশিন দিয়ে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গভীর থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এ ছাড়া আত্রাই নদীর ওপর ব্রিজের কাছে আরও দুটি ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রভাবশালীরা। আর এতে হুমকির মুখে পড়েছে কোটি টাকার ব্যয়ে নির্মিত সড়ক ও সেতু। পানির তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পড়েছে ফসলি জমি, বসতবাড়ি ও মসজিদ। বিগত ৩-৪ বছর ধরে এখান থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে নিষেধ করায় উল্টো এলাকাবাসীকে হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে।  প্রতিদিন  তারা বিপুল পরিমাণ বালু উত্তোলন ও বিক্রি করে লাভবান হলেও এলাকার ফসলি জমি, সড়ক, সেতু ও বিভিন্ন স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে। ভুক্তভোগী বেলাল হোসেন বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলনকারীরা এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ তাদের বাধা দেওয়ার সাহস করে না। তারা ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদীর গভীর থেকে বালু উত্তোলন করছে। এতে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় আমার দুই বিঘা ফসলি জমি ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে। পুরো এলাকায় শত শত বিঘা আবাদি জমি ভাঙনের মুখে পড়েছে। এদিকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। ভুক্তভোগীরা জানান, ড্রেজিং পদ্ধতিতে বালু উত্তোলন করা হলে ভরা বর্ষায় তাদের বসত ভিটা ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হবে। জানা যায়, ২০১০ সালে বালু উত্তোলন নীতিমালায় যন্ত্রচালিত মেশিন দ্বারা ড্রেজিং পদ্ধতিতে নদীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এ ছাড়াও সেতু, কালভার্ট, রেললাইনসহ মূল্যবান স্থাপনার এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন করা বেআইনি। অথচ বালু দস্যুরা সরকারি ওই আইন অমান্য করে ড্রেজার মেশিন দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। ফকিরপাড়ার ভুক্তভোগী মর্শিদা সরজান, সনেকা ও আবদুর রশিদ, জানান, আমার বসতবাড়ি বালু উত্তোলন করায় বাড়ির আশপাশে ভেঙ্গে ধসে পড়ছে। এ অবস্থায় আমরা পরিবার নিয়ে আতংকে আছি। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন নিষেধ করায় আমাদের মারধরের হুমকি দিচ্ছে। বালু উত্তোলন বন্ধ করার জন্য আমরা বেশ কয়েক বার বাধা দিয়েছি। কোনো কাজ হয়নি। বালু উত্তোলনকারী আহাদী ও সহযোগিতাকারী আবদুর রাজ্জাগ মাস্টার বলেন, এলাকাবাসীর স্বার্থে নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। সেই বালু দিয়ে একটি নতুন মসজিদ নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। নলডাঙ্গা উপজেলা ইউএনও আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, গ্রামবাসীর অভিযোগ পেয়েছি। খুব শিগগিরই উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নদী থেকে বালু উত্তোলনে কাউকে অনুমতি দেওয়া হয়নি, বিষয়টি জানার পর ভুমি অফিসের তহশীলদারকে বালু উত্তোলন বন্ধে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর