সোমবার, ৫ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

কোরবানির হাটে লকডাউন

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

কোরবানির হাটে লকডাউন

বৈশ্বিক মহামারী করোনায় বগুড়ার কোরবানি হাটে লকডাউনের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। লকডাউনের বিধিনিষেধ নিয়ে আশঙ্কায় বগুড়ার কোরবানির পশুর খামারিরা। এর সঙ্গে গো খাদ্যের মূল্য বেড়ে যাওয়ায় ভালো নেই তারা। খামারে থাকা কোরবানির গবাদিপশু বিক্রি নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে জেলার ছোট বড় মিলিয়ে প্রায় ২৬ হাজার খামারি। খামরিরা বলছেন, গত কোরবানির হাটে শেষ পর্যন্ত কিছু দাম পেলেও এবার কোরবানির পশুর হাট জমে ওঠার মুহূর্তে কঠোর লাকডাউনের ঘোষণায় হাট না বসলে তাদের লোকসান গুনতে হবে। আর প্রাণী কর্মকর্তারা বলছেন, খামারিদের কথা ভেবে অনলাইনে কোরবানির পশু কেনাবেচার প্রতি জোর দেওয়া হচ্ছে। জানা যায়, কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে লকডাউন ছাড়া কিছু এলাকায় হাটবাজারে গরু-ছাগল উঠতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই বগুড়া অঞ্চলের হাটে কিছু কিছু কোরবানির পশু দেখা মিললেও সেইভাবে বেচাকেনা শুরু হয়নি। সাধারণ দিনের মতো বগুড়ার হাটে গরু দেখা যাচ্ছে ও বেচাকেনা শুরু হচ্ছে। কোরবানির হাটের সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততটায় আশায় বুক বাঁধলেও করোনাভাইরাস বাদ সেধেছে। কোরবানির হাট বসবে কি বসবে না পশু বিক্রি হবে কি হবে না এ নিয়ে সবধরনের খামারিরা এখন চিন্তায় পড়েছে। যদিও বগুড়া শহরের সুলতানগঞ্জ, কালিতলা, সাবগ্রাম, নয়মাইল, নামুজা, ঘোড়াধাপ, সৈয়দ আহম্মেদ হাট, নাড়ুয়ামালা, সারিয়াকান্দি হাট, পাকুল্লা হাটে এখনো মৌসুমি গরুর ব্যাপারীদের আনাগোনা শুরু হয়নি। স্বাভাবিক দিনের মতোই গরু উঠছে। কেউ কেউ আবার কঠোর লকডাউনের চিন্তা করে একটু আগেই কোরবানির পশু কিনে নিচ্ছে। গরু ব্যবসায়ীরা তাদের গরু এক জেলার হাট থেকে কিনে অন্য জেলার হাটে বিক্রি করে থাকেন। গত বছর বগুড়ার হাটগুলো থেকে ব্যাপারীরা ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রংপুরের গরু ক্রয় করতে দেখা গেছে। বগুড়া শহরের ভাটকান্দি উত্তর পাড়ার গরুর খামারি মাসুদুর রহমান রনি জানান, তিনি কোরবানি যোগ্য দুটি গরু মোটাতাজা করেছেন। ১ লাখ ৬০ হাজার দিয়ে দুটি গরু কিনে লালন পালন, গো খাদ্য খরচ, চিকিৎসা বাবদ তার দুটি গরুর পেছনে গত এক বছরে খরচ হয়েছে ৮০ হাজার টাকা। একটি গরুর পিছনে তার খরচ হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা। আর কোরবানিদাতারা গরুর দাম হাঁকিয়েছেন ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা। করোনার কারণে হাটে গরু নিতে না পারায় তার গরুর দাম বাড়ছে না। দুটি কোরবানি যোগ্য গরু নিয়ে তিনি পড়েছেন বিপাকে। বগুড়া শহরের সূত্রাপুর ঘোড়াপট্টি লেনের বাসিন্দা ও বগুড়া ভান্ডার এগ্রো ফার্মের মালিক তৌহিদ পারভেজ বিপ্লব জানান, তিনি নিউজিল্যান্ডে অকল্যান্ড ইনস্টিটিউট অব স্টাডিজে ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস নিয়ে শিক্ষা জীবন শেষে বগুড়ায় ফিরে গরুর ফার্ম গড়েন। সাতটি গরু দিয়ে শুরু করে তার ফার্মে এখন ২০০ গরু রয়েছে। যার অধিকাংশ কোরবানি যোগ্য। তার ফার্মে শাহিওয়াল, ব্রাহমা, ফ্রিজিয়ান ও দেশি জাতের গরু রয়েছে। গত এক দশক ধরে তিনি কোরবানির সময় ভালো ব্যবসা করলেও এবার ঈদুল আজহায় গরু বিক্রি নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। বৈশি^ক মহামারী করোনা, অন্য দিকে লকডাউন। সরকারের কঠোর বিধিনিষেধ। এমন পরিস্থিতিতে কোরবানি পশুর হাট, বেচাকেনা কেমন হবে তা নিয়েই চিন্তিত তিনি।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর