মঙ্গলবার, ২৭ জুলাই, ২০২১ ০০:০০ টা

পঞ্চগড়ে তিন গুণ দামে বিক্রি হচ্ছে কভিডের ওষুধ

পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ে তিন গুণ দামে বিক্রি হচ্ছে কভিডের ওষুধ

পঞ্চগড়ে করোনাভাইরাসের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয় এমন ওষুধ তিন গুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এক শ্রেণির অসাধু  ব্যবসায়ী ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে কম দামে কিনলেও বিক্রি করছেন মোড়কে উল্লেখ করা দামে। এদিকে জেলায় বর্তমানে বাড়িতে বাড়িতে জ্বর সর্দির প্রকোপ বেড়ে গেছে। রোগীর সংখ্যা অনুযায়ী প্যারাসিটামল গ্রুপের ওষুধের সরবরাহ কম। এ জন্য জেলায় দেখা দিয়েছে প্যারাসিটামল সংকট। জানা গেছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য রেমডেসিভি গ্রুপের একটি ইনজেকশন বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৫০০ টাকায়। অন্যদিকে এই গ্রুপের এক একটি ট্যাবলেট বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। অথচ ওষুধ কোম্পানিগুলো ওষুধ বিক্রেতাদের কাছে ইনজেকশন মাত্র ১ হাজার ২০০ টাকা এবং প্রতি ট্যাবলেট ১২০ টাকা দরে সরবরাহ করছে। প্রতিটি ইনজেকশনের মোড়কে এমআরপি মূল্য লেখা রয়েছে ৩ হাজার ৫০০ টাকা এবং ট্যাবলেটের মোড়কে মূল্য লেখা রয়েছে ২০০ টাকা। এ ব্যাপারে বিভিন্ন গ্রুপের এরিয়া ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওষুধগুলো প্রথম দিকে ওই মূল্যে বিক্রি করা হলেও সরকারি নির্দেশনায় দাম কমানো হয়েছে। কিন্তু মোড়কে এখনো তা উল্লেখ করা হয়নি। তাই এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী মোড়কে উল্লিখিত দামেই ওষুধ বিক্রি করছে। এতে করোনা আক্রান্ত রোগীরা প্রতারিত হচ্ছেন। অনেকে অর্থের অভাবে ওষুধ কিনতে পারছে না। ইনসেপটা গ্রুপের এরিয়া ম্যানেজার শহীদুল ইসলাম জানান, দাম কমে যাওয়ার কারণে রোগী যাতে প্রতারিত না হয় এ জন্য আমরা অন্যান্য জেলায় সরাসরি কভিড আক্রান্ত রোগীদের হাতে হাতে এই ওষুধগুলো সরবরাহ করছি। কিন্তু পঞ্চগড় জেলার কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্টস সমিতি এ ব্যাপারে আপত্তি তোলে।

তারা নিজেরাই দোকানে দোকানে ১০০ টাকা লাভ নিয়ে এ ওষুধ বিক্রি করার কথা। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীরা তা না করে তিন গুণ দামে বিক্রি করছে। বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি পঞ্চগড় জেলা শাখার সভাপতি মোবাশ্বের হোসেন জানান, ওষুধ কোম্পানিগুলো দাম কমিয়ে বাজারে সরবরাহ করলেও মোড়কে বেশি মূল্য উল্লেখ থাকার কারণে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী এ সুযোগ নিচ্ছে। এতে সাধারণ মানুষ প্রতারিত হচ্ছে। তাই মোড়কে উল্লিখিত দাম কমিয়ে নির্ধারিত মূল্য লেখার উদ্যোগ নিতে হবে। না হলে প্রতারণা চলতেই থাকবে। ওষুধ তত্ত্বাবধায়ক জাহিদুল ইসলাম জানান, পঞ্চগড়ে ঔষধ প্রশাসনের কোনো অফিস নেই। আমি দুটো জেলার দায়িত্বে আছি। আমরা বিষয়গুলো গুরুত্ব সহকারে দেখছি। এদিকে জ্বর, সর্দি, কাশি বেড়ে গেছে এই জেলায়। বাড়িতে বাড়িতে এই রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেলেও প্যারাসিটামল গ্রুপের ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে না বাজারে। ফলে দুর্ভোগে পড়েছে রোগীরা। জানা গেছে, সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য জেলা প্রশাসন  ওষুধ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করছে। জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম জানান, প্যারাসিটামল গ্রুপের সংকট কেটে গেছে। আমি নিজে বিভিন্ন কোম্পানির সঙ্গে আলাপ করে এই জেলায় সরবরাহ বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করেছি। করোনা চিকিৎসার ওষুধের দাম বেশি নেওয়ার কথা জেনেছি। এ ব্যাপারে সব ্ওষুধ বিক্রেতা সমিতির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। নির্ধারিত দামে বিক্রির জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । ওষুধের বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর