বৃহস্পতিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২১ ০০:০০ টা

মগড়া নদী এখন মরা খাল

নেত্রকোনা প্রতিনিধি

মগড়া নদী এখন মরা খাল

কালের আবর্তে নেত্রকোনা জেলা থেকে হারিয়ে গেছে একাধিক খরস্রোতা নদী। কোনোরকম টিকে আছে মগড়া। এ নদীটি নেত্রকোনা শহরকে ঘিরে রাখলেও এখন মৃতপ্রায়। সাধারণ মানুষের আন্দোলনের মুখে দু-একবার দখল উচ্ছেদ অভিযান শুরু হলেও রহস্যজনক কারণে আবার তা বন্ধ হয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান, অসংখ্য নদী, খাল-বিল হাওর-বাঁওড় বেষ্টিত নেত্রকোনার অন্যতম নদী মগড়ার এক সময় ছিল ভরা যৌবন। এ নদীর বুক চিরে চলত বড় বড় স্টিমার, লঞ্চ, কার্গো নৌকা। শহরের ওপর দিয়ে প্রবাহিত মগড়া নদী দিন দিন বেদখল হয়ে খালে পরিণত হয়েছে। উভয় তীর অবৈধভাবে দখল  করে গড়ে তোলা হয়েছে দোকানাপাট, বাসতবাড়ি, ক্লাব-সমিতিসহ নানা স্থাপনা। নদীতে ফেলা হয় ময়লা-আবর্জনা। ড্রেন ও পয়োনিষ্কাশনের ট্যাংকির সংযোগ এ নদীতে থাকায় পানি দূষিত হয়ে গেছে। হারিয়ে গেছে নদীর সৌন্দর্য্য। মগড়া নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন অনেকে। শাখা-প্রশাখা ছাড়াই শুধু ১৪৮ কিলোমিটার মগড়া নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছিল আজকের জেলা শহর নেত্রকোনা। প্রসার ঘটেছিল জেলার ব্যবসা-বাণিজ্য ও সভ্যতার। শহরের প্রায় ছয় কিলোমিটারের মধ্যে সাতপাই আনন্দবাজার থেকে কাটলি পর্যন্ত তিন কিলোমিটারে ৬৩ পয়েন্ট রয়েছে অবৈধ স্থপনা। এর মধ্যে ১৩টি পয়েন্ট নিচিহ্ন হয়ে গেছে। জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, ২০১৯ সালে ৩১৬টি অবৈধ স্থাপনার বিপরীতে ২৮৫টি উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। মাত্র দুই বছরের মাথায় আবার দখলের অবস্থা আগের মতোই।

স্থানীয় ভূমিহীনদের অভিযোগ, নিজেদের জমি না থাকায় তারা নদীর পাড়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু উচ্ছেদ অভিযানে শুধু তারাই পড়েছেন। বিত্তশালীরা শহরজুরে দখলে থাকলেও তারা আছেন বহাল তবিয়তে। জানা যায়, ঢাকার বুড়িগঙ্গাসহ দেশের বিভিন্ন নদ-নদী দখলমুক্ত করতে সিএস মূলে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হলেও নেত্রকোনার মগড়া নদীতে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয় বিআরএস মূলে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী কর্মকর্তা মোহন লাল সৈকত বলেন, ‘সবশেষ যখন উচ্ছেদ অভিযান হয়েছে তিনি তখন ছিলেন না। সব নদী সিএস মূলেই দখলমুক্ত করা হবে।’ জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে আবারও নদী দখলমুক্ত কার্যক্রম হাতে নেবেন বলে জানান।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর