বৃহস্পতিবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২২ ০০:০০ টা

এক বছর ভাতা পান না তিন শতাধিক বিধবা-প্রতিবন্ধী

বেলাল রিজভী, মাদারীপুর

এক বছর ভাতা পান না তিন শতাধিক বিধবা-প্রতিবন্ধী

মাদারীপুরের কালকিনিতে তালিকাভুক্ত হয়েও তিন শতাধিক বিধবা ও প্রতিবন্ধী এক বছর ধরে ভাতা পান না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অসহায়, হতদরিদ্র এসব মানুষ ভাতাবঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। স্থানীয়দের দাবি- দ্রুত এদের ভাতা প্রদান করা হোক। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, ভাতার টাকা বিতরণে কোনো অনিয়ম হয়নি। যারা টাকা পাচ্ছেন না তাদের কাগজপত্র তদারকি করে দেখা হবে।

সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, মাদারীপুরের কালকিনি পৌর শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর রাজদী গ্রামের শাহিনুর বেগম। নিঃসন্তান শাহিনুরের স্বামী মারা গেছেন অনেক বছর আগে। বোনের স্বামীর বাড়িতে ছোট্ট ঘর তুলে বসবাস করছেন। শাহিনুরের বোন এবং তার স্বামীও মারা গেছেন। আপন বলতে তার আর কেউ নেই। সরকারিভাবে বরাদ্দ বয়স্ক ভাতার টাকা দিয়ে তিনি ওষুধ কিনে খেতেন। এক বছর ধরে ভাতা না পাওয়ায় মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন শাহিনুর। ওই গ্রামের ৮০ বছরের বৃদ্ধা রহিমুন নেসা। তিনিও থাকেন মেয়েজামাই বাড়িতে। এক বছর ভাতার টাকা পাচ্ছেন না রহিমুন নেসা। কালকিনি উপজেলার বিভাগদী গ্রামের দেলোয়ার সরদারের প্রতিবন্ধী ছেলে মারুফ আহমেদও একই অভিযোগ করেন। শুধু তারা নয়, কালকিনি পৌরসভার তথ্যমতে এ রকম তিন শতাধিক ভাতাভোগী এক বছর ধরে সরকারি ভাতা পাচ্ছেন না। কালকিনি উপজেলা সমাজ সেবা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় বয়স্ক ভাতা ১০ হাজার ৯৪১, বিধবা ভাতা ৪ হাজার ৩৬৯, প্রতিবন্ধী ভাতা ৪ হাজার ৪৭৫ জন ও শিক্ষা উপবৃত্তি পায় ১৭১ জন। স্থানীয় বাসিন্দা আবির পারভেজ বলেন, শাহিনুর ও রহিমুন নেসার মতো অনেকে সরকারি ভাতা থেকে বঞ্চিত। বিভিন্ন মানুষের সাহায্য সহযোগিতায় এখন তাদের সংসার চলে। সরকারি ভাতা পেলে উপকৃত হতেন। রহস্যজনক কারণে বর্তমানে এদের ভাতা বন্ধ রয়েছে। কালকিনি পৌরসভার প্যানেল মেয়র আসাদুজ্জামান তালুকদার লাবু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, তিন শতাধিক লোক আমাদের কাছে এসেছিল ভাতা পাওয়ার জন্য। সমাজ সেবা অফিসের জটিলতার কারণে তারা ভাতা পাচ্ছেন না। কালকিনি উপজেলা সমাজ সেবা অফিসের সহকারী সমাজ সেবা কর্মকর্তা মশিউর রহমানের দাবি, সঠিকভাবেই তালিকা অনুসারে তারা প্রতি কিস্তিতে ভাতার টাকা মোবাইলে পাঠাচ্ছেন। কেউ যদি পেয়ে না থাকে তদারকি করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বৃদ্ধা শাহিনুর বেগম বলেন, আগে ব্যাংক থেকে আমাদের ভাতার টাকা দিত। তখন নিয়মিত পেতাম। মোবাইল নম্বরে দেওয়া শুরু করার পর থেকেই ঝামেলা হচ্ছে। এক কিস্তি টাকা পাইছি রোজার সময় আর পাইনি। ভাতা না পাওয়ার বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ওমর গণি বলেন, তালিকায় নাম থাকলেও ভাতা পায়নি। এ বিষয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। তবুও ভাতা পাইনি।

সর্বশেষ খবর