ঢাকার ধামরাইয়ে সরকারি চাকরি দেওয়ার লোভ দেখিয়ে এক কৃষি কর্মকর্তা প্রতারণার মাধ্যমে ৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত কয়েক মাসেও চাকরি দিতে না পারায় টাকা ফেরত চাইলেও তা দিচ্ছে না। তবে ভুক্তভোগীকে ৬ লাখ টাকার একটি চেক দিলেও গতকাল চেক নিয়ে ব্যাংকে গিয়ে অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকায় টাকা তুলতে পারেননি চাকরি প্রার্থী। এতে ব্যাংকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। জানা গেছে, উপজেলার কুশুরা ইউনিয়নের হরিদাসপুর গ্রামের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মমিনুর রহমান ওরফে মহসিন সুতিপাড়া ইউনিয়নের বেলীশ্বর গ্রামের কৃষক আবদুল জলিলের সঙ্গে কৌশলে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন। এরপর কৃষক জলিলের সরলতার সুযোগ নিয়ে তার মেয়ের ঘরে নাতি জুয়েল হোসেনকে বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের এমএলএসএস পদে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেন। এতে জলিলের কাছে চাকরি দেওয়ার শর্তে ১০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন মমিনুর রহমান।
প্রথমে জলিলের কাছ থেকে তার বাড়িতে বসে ৫ লাখ টাকা ঘুষ নেন তিনি। পরে তিনি জলিলের কাছ থেকে নগদ আরও ১ লাখ এবং তার মেয়ের জামাই আলতাফ হোসেনের (বেলীশ্বর কৃষি ব্যাংক শাখা) অ্যাকাউন্ট নম্বরের বিপরীতে ১ লাখ টাকার চেক নেন। চেকের মাধ্যমে বেলীশ্বর কৃষি ব্যাংকে গিয়ে আলতাফ হোসেনের অ্যাকাউন্ট নম্বর থেকে ১ লাখ টাকা উত্তোলন করেন তিনি। এতে মোট ৭ লাখ টাকা ঘুষ নেন মুমিনুর রহমান। এদিকে গত ৬ নভেম্বর বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের এমএলএসএস পদে ইন্টারভিউ দেন জুয়েল হোসেন। কিন্তু জুয়েল হোসেনের চাকরি হয়নি। জুয়েলের চাকরি না হওয়াতে ঘুষের টাকা ফেরত চান মুমিনুর রহমানের কাছে। দেই দিচ্ছি বলে গত কয়েক মাস ধরে কালক্ষেপণ করছেন মুমিন। টাকার জন্য তাকে চাপ প্রয়োগ করা হলে তিনি নগদ ১ লাখ টাকা আর সোনালী ব্যাংক কালামপুর শাখা এসএফ-১০-৪৪৪৬৩৫৬ নং একটি চেকের পাতায় স্বাক্ষর করে দিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিতে বলেন। চেকের তারিখ ছিল ৭-৮-২০২২ ইং। গতকাল সোমবার চেকটি নিয়ে কালামপুর সোনালী ব্যাংকে যান আবদুল জলিল। কিন্তু তার অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ টাকা দেয়নি। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং প্রতারক ওই কৃষি কর্মকর্তার বিচার দাবি করেন। কৃষক আবদুল জলিল জানান, তার লোভের প্রলোভনে পড়ে অনেক কষ্ট করে ধারদেনা ও সুদের ওপর টাকা এনে কৃষি কর্মকর্তা মুমিনকে দিয়েছি। এখন তিনি আমার টাকা দিচ্ছেন না। এখন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করা ছাড়া আমার কোনো উপায় নেই বলে বিলাপ করেন। এ ব্যাপারে কৃষি কর্মকর্তা মমিনুর রহমান মহসিনের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুল হাসান বলেন, মমিনুর রহমানের ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি আমি এক মাধ্যমে জেনে মুমিনের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছি চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ৭ লাখ টাকা তিনি হাতিয়ে নিয়েছে। ভুক্তভোগী আমার কাছে অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব বলে জানান তিনি।