সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

কলা চাষে ভাগ্য বদলে ঝুঁকছেন চরের কৃষকরা

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কলা চাষে ভাগ্য বদলে ঝুঁকছেন চরের কৃষকরা

কুড়িগ্রামে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা তাদের কৃষিতে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কলা চাষে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কলা অর্থকারী ফসল হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় ভাগ্য বদলের স্বপ্ন বুনছেন এ জেলার চরাঞ্চলের কৃষকরা। ফলে দিন দিন বাড়ছে কলা বাগানের সংখ্যা। একরের পর একর কলা বাগান করে বছর শেষে মোটা অঙ্কের টাকা উপার্জন করতে পারায় অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠছেন কলা চাষে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় কলা চাষে খরচ কম, লাভ বেশি হওয়ায় পতিত ও অনাবাদি জমিতে কলা চাষাবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। শুধু জৈব সার ব্যবহার করে কলা চাষ করা সম্ভব। এ ছাড়া কলা চাষে পরিচর্যা কম করতে হয়। অন্যদিকে কৃষি শ্রমিক বেশি লাগে না বলে কৃষকদের কলা চাষে আগ্রহ বেড়েছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, এ বছর জেলায় ২৯০ হেক্টর জমিতে কলা চাষ হচ্ছে। ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধ কুমরসহ বিভিন্ন নদী অববাহিকার বেশ কিছু চরাঞ্চলে এবার কলার চাষ বাম্পার হয়েছে। ফলে নদীর তীরবর্তী চরাঞ্চলে কলা চাষের চাহিদা বাড়ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার কলার বাম্পার ফলন হবে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। সদর উপজেলার ধরলা তীরবর্তী এলাকার কৃষক সিদ্দিক মিয়া বলেন, অন্য যেকোনো ফসলের চেয়ে অনেক বেশি লাভবান হওয়া যায় কলা চাষে। ফলে বন্যায় ফসলের ক্ষতি হওয়ায় অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এখন কলা চাষ করছি। জৈব সার ব্যবহার করার কারণে এখানে ফলন ভালো হয়। ফলে খরচও কম হয়। এ খাতে লাভ বেশি বলে এলাকার কৃষকদের কলা চাষের আগ্রহ বাড়ছে।

তিনি আরও বলেন, এ বছর আট বিঘা জমিতে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সাগর কলা, চিনিচম্পা, চাঁপা, মালভোগ, অমৃত সাগর ও মেহর সাগরসহ বিভিন্ন জাতের চারা রোপণ করেছি। এসব জাতের কলাগাছ থেকে অল্প দিনেই ফল পাওয়া যায়। প্রতি বিঘা জমিতে ৩০০ থেকে ৪০০ চারা রোপণ করা যায়। পৌর এলাকার ভেলাকোপা গ্রামের হোসেন আলী বলেন, আমি দুই বিঘা জমিতে কলা চাষ করেছি। ফলনও ভালো দেখা যাচ্ছে। এখনো কলা বিক্রি শুরু করিনি। আশা করছি বন্যায় যে ফসলের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা পুষিয়ে নিয়ে বেশ লাভবান হব। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাগানের ক্ষতি হলে আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হব। সদরের হলোখানা ইউনিয়নের মাস্টারের হাট গ্রামের কলা চাষি সাইদুর রহমান বলেন, কলা চাষে লাভের পাল্লাই ভারি থাকে।

তা ছাড়া কলা বিক্রিতে কোনো ঝামেলা হয় না। পাইকাররা জমি থেকেই কলা কেটে নিয়ে যায় ও কলার কাঁদিও আগাম বিক্রি করা যায়। এটি কৃষকদের বাড়তি সুবিধা। কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক  আজিজুল ইসলাম জানান, জেলায় দিন দিন কলা চাষে কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। এ বছরে জেলায় সমতল চরাঞ্চল ও পতিত জমিতে ৩১০ হেক্টর জমিতে কলা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্জিত হয়েছে ২৯০ হেক্টর। গত বছরের তুলনায় এ বছর ১২০ হেক্টর বেশি জমিতে বিভিন্ন জাতের কলা চাষ হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকরা লাভবান হবেন। এ ছাড়া কলা চাষে কৃষি বিভাগ কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও দিক-নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন।

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর