শনিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২২ ০০:০০ টা

বেপরোয়া বালু তোলায় হুমকিতে ব্রহ্মপুত্রে জেগে ওঠা চর

ট্রাক ও ট্রাক্টরে পাঠানো হয় বিভিন্ন স্থানে

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

বেপরোয়া বালু তোলায় হুমকিতে ব্রহ্মপুত্রে জেগে ওঠা চর

গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে তোলা বালু স্তূপ করে রাখা হয়েছে তীরে -বাংলাদেশ প্রতিদিন

গাইবান্ধা সদর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবাধে চলছে বালু উত্তোলন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েকবার ব্যবস্থা নেওয়া হলেও থামছে না বালু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য। চরে নিজেদের জমি ফিরে পাওয়ার আশায় মানুষ বুক বাঁধলেও অবৈধ বালু উত্তোলনে চরগুলো জেগে উঠতে পারছে না বলে জানান তারা। স্থানীয় বাসিন্দা ও জনপ্রতিনিধিরা বিষয়টি নিয়ে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে আবেদন জানিয়েও ফল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেছেন। ব্রহ্মপুত্র তীরবর্তী সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর, গাইবান্ধা সদরের গোঘাট ও বারবলদিয়া গ্রামের বাসিন্দারা বলছেন, দেড় বছরের বেশি সময় ধরে অবৈধ বালু উত্তোলন করছেন গাইবান্ধা সদরের মালিবাড়ি ইউনিয়নের সরিষার খামার গ্রামের কয়েকজন ব্যবসায়ী। ভোর থেকে বেলা ১০টা পর্যন্ত ড্রেজার মেশিন দিয়ে ব্রহ্মপুত্রের তলদেশে পাইপ ঢুকিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এসব বালু সদরের কামারজানি ইউনিয়নের গোঘাট নতুন বন্দর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার গবরাবাড়ি এলাকায় স্তূপ করে রাখা হয়। সেখান থেকে বিক্রীত বালু ট্রাক ও ট্রাক্টরে করে পাঠানো হয় বিভিন্ন স্থানে। সুন্দরগঞ্জের শ্রীপুর গ্রামের আবদুুল খালেক, গাইবান্ধা সদরের সর্দার পাড়ার দুলা মিয়া, গোঘাট গ্রামের সাজু মিয়া বলেন, আমাদের অনেকের বাড়িসহ জমি বন্যা ও নদীভাঙনে বিভিন্ন সময় বিলীন হয়ে গিয়েছিল। এখন আবার সেগুলো জাগতে শুরু করেছে। বালু উত্তোলনের ফলে চরগুলো ঠিকভাবে জেগে উঠতে পারছে না। আবার স্রোতের গতি বেড়ে নদীভাঙন, ফসলি জমি নষ্ট ও ওয়াপদা বাঁধ ঝুঁকিতে পড়েছে। বাঁধের ওপর দিয়ে বালুবাহী ট্রাক্টর চলাচল করায় পাকা রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সুন্দরগঞ্জের দক্ষিণ শ্রীপুর কেল্লাবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা আবদুল মালেক বলেন, ড্রেজার মেশিন ও বাল্কহেডের সাহায্যে বালু তুলে নিয়ে যান জড়িতরা। ভোর থেকে ৪-৫ ঘণ্টা বালু তোলার পর তারা সটকে পড়েন। প্রশাসনের কাছে বহুবার অভিযোগ করেছি। দু-একবার ম্যাজিস্ট্রেট বালু ব্যবসায়ীদের ধরে জরিমানা করেছিলেন। কয়েক দিন পর আবার বালু তোলা শুরু করে। স্থানীয়দের বাধা মানে না। উল্টো বালু ব্যবসায়ীদের হুমকিতে এলাকাবাসীই অসহায়। এ ব্যাপারে গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরীফুল আলম বলেন, কয়েকজন বালু উত্তোলনকারীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর