শিরোনাম
সোমবার, ২৩ জানুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

৪ হাজার হেক্টর জমিতে ‘লেট ব্লাইট’ রোগ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

৪ হাজার হেক্টর জমিতে ‘লেট ব্লাইট’ রোগ

লালমনিরহাটের ৫টি উপজেলার আলু খেতে ‘লেট ব্লাইট’ রোগ দিন দিন বেড়েই চলছে। আর এ রোগে আলু গাছ পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বালাইনাশক বারবার স্প্রে করার পরও গাছ পচন রোধ না হওয়ায় দিশাহারা কৃষকরা। ঘন কুয়াশার ও প্রচন্ড ঠা ার কারণে এই রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটছে। রোগ প্রতিকারে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান জেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা। তবে গতকাল সর্বশেষ কৃষি বিভাগের তথ্যমতে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে এই লেট ব্লাইট রোগ দেখা দিয়েছে। এ বছর প্রায় ২৩ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে আলুর চাষাবাদ করা হয়েছে লালমনিরহাট জেলায়। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দেড় হাজার হেক্টর বেশি। তবে আবাদি জমির পরিমাণ বাড়লেও প্রচন্ড শীত ও ঘন কুয়াশায় আলুর খেতে দেখা দিয়েছে ‘লেট ব্লাইট’ রোগ। এই রোগের আক্রমণে পাচে যাচ্ছে আলুর পাতা ও কান্ড। প্রতি বছর শীতেই আলু খেতে এমন রোগ বালাই দেখা দিলেও সেভাবে পরামর্শ পাওয়া যায় না কৃষি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে। তাই কোনো উপায় অন্তর না পেয়ে ভরসা করতে হয় কীটনাশক দোকানদারদের ওপর। তবে তা স্প্রে করেও তেমন উপকার হয় না। বরং আলুর ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা। লালমনিরহাটের মহেন্দ্রনগর এলাকায় সরজমিনে গিয়ে কথা হয় কৃষক সোবাহান এর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা দিশাহারা হয়ে পড়েছি। দুই থেকে তিন দিন পরপর ওষুধ দিচ্ছি, কিন্তু কোনো কাজ হয় না। প্রতিদিন নতুন নতুন জমি আক্রান্ত হচ্ছে। আলু গাছের শুধু কান্ড পড়ে আছে, পাতা-ডগা কিছুই নেই।’ বড়বাড়ি এলাকার কৃষক ফজল আলী বলেন, ‘প্রতি বছর আলুর আবাদ করিয়া কিছু টাকা পাওয়া যায়। তা তো এবার হবার নয়। আলুর খেতে যে হারে পচন আসছে তাতে মনে হয় আবাদ আর হবার নয়। আবাদ মারা গেলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কীভাবে চলব, ভাবলে দিশাহারা হয়ে পড়ি।’ কৃষক কায়ছার আলী বলেন, ‘আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় আলু গাছ ঝলসে গেছে।’ এ অবস্থায় কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ কিংবা কোন ধরনের সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। তবে কৃষি কর্মকর্তাদের দাবি আক্রান্ত খেতে ওষুধ স্প্রে করাসহ প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের। জেলার একাধিক ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা বলেন, ‘অতিরিক্ত শীত ও কুয়াশার কারণে লেট ব্লাইট রোগের আক্রমণ হয়েছে। আক্রান্ত ফসলে ম্যানকোজেব গ্রুপের ওষুধ স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই ওষুধ স্প্রে করায় রোগের আক্রমণ কিছুটা কমে আসবে। লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ হামিদুর রহমান বলেন, আক্রান্ত রোগ দমনের জন্য আগাম প্রস্তুতি হিসেবে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যেসব জাতে লেট ব্লাইট কম হয় সেসব জাত ব্যবহারের জন্যও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সঠিক পরিমাণে ওষুধ স্প্রে করার জন্যও বলা হচ্ছে। আর এজন্য কৃষকদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর