বৃহস্পতিবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা

এক ইউনিয়নেই ৫২ অবৈধ ইটভাটা

পোড়ানো হচ্ছে কাঠ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষিজমি

পাবনা প্রতিনিধি

এক ইউনিয়নেই ৫২ অবৈধ ইটভাটা

ঈশ্বরদীর লক্ষ্মীকুণ্ডা ইউনিয়নের ইটভাটায় পোড়ানোর জন্য স্তূপ করে রাখা কাঠ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

পাবনার ঈশ্বরদীর শুধু লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়নেই চলছে ৫২টি অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম। এসব ভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। ইট তৈরির জন্য মাটি কাটায় বিনষ্ট হচ্ছে কৃষি জমি। ভারসাম্য হারাচ্ছে পরিবেশ। কৃষিজমি নষ্ট করে গড়ে ওঠা এসব ইটভাটা দীর্ঘদিন ধরে কীভাবে চালু রয়েছে, এ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সচেতন মহল। ভাটার ইট পরিবহনের কারণে লক্ষ্মীকুন্ডা ও পার্শ্ববর্তী সাহাপুর ইউনিয়নের রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা হয়েছে। এসব সড়কে চলাচলে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন এলাকাবাসী। লক্ষ্মীকুন্ডা ইউপির তিনটি গ্রাম কামালপুর, দাদাপুর ও বিলকেদার ঘুরে দেখা যায়, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইটভাটায় কয়লার পরিবর্তে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে দেদার। ভাটা নির্মাণের জন্য চিমনীর উচ্চতা ও অন্য যে নির্দেশনা রয়েছে তার অধিকাংশ মানছেন না মালিকারা। এখানে ৫০টি অটোফিস ও দুটি জিকজ্যাক (হাওয়া) ভাটা রয়েছে। অটোফিস ভাটার সবগুলোতে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে। ভাটার কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষণ, নিধন হচ্ছে গাছপালা। ভাটা মালিকরা অবৈধ উপায়ে পদ্মার চরের ফসলি জমি থেকে মাটি সংগ্রহ করে থাকেন। স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, সবাইকে ম্যানেজ করেই বছরের পর বছর চলছে এসব অবৈধ ইটভাটা। অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় করা হলেও তা লোক দেখানো। এসব অবৈধ ভাটা ভেঙে গুঁড়িয়ে না দিলে বন্ধ হবে না। জেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল লতিফ জানান, ওই ইউনিয়নে বিপুল সংখ্যক ইটভাটা গড়ে ওঠায় কৃষি জমির পরিমাণ কমেছে। ভাটার নিঃসরিত ধোঁয়ায় আম-লিচু-কাঁঠাল বাগান এবং ফসলি জমির ওপর প্রভাব পড়ছে। দূষণে জনজীবন ক্রমশ হুমকির মুখে পড়ছে। উপজেলা প্রকৌশলী এনামুল কবীর বলেন, ভাটার ইট ও ড্রামট্রাকে বালু পরিবহনের জন্য ওই এলাকার রাস্তাঘাটের অবস্থা শোচনীয়। নতুন করে রাস্তা নির্মাণ করা ছাড়া উপায় নেই। ভারী পরিবহন চলাচল বন্ধ না হলে নতুন রাস্তা নির্মাণ করেও লাভ হবে না। ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরুল কায়েস জানান, অবৈধ ইটভাটার বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। মাঝেমধ্যে অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় করা হচ্ছে। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় না কেন জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। পাবনা পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক নাজমুল হোসাইন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। তাদের (ভাটামালিক) পরিবেশ ছাড়পত্র নেওয়ার জন্য বলেছি। তারা আবেদন করলে যাচাই-বাছাই করে ছাড়পত্র দেব। আর যারা নেবেন না, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সর্বশেষ খবর