শনিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ০০:০০ টা
সংক্ষিপ্ত

জীবিত হয়েও ভোটার তালিকায় মৃত

নওগাঁ প্রতিনিধি

শিউলী বিবি। বয়স ৪০ বছরের বেশি। তিনি জীবিত থাকলেও ভোটার তালিকায় মৃত। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন তিনি। ভোটার হালনাগাদ তথ্যে তার মৃত্যুর বিষয়টি যুক্ত করে দিয়েছেন তথ্য সংগ্রহকারীরা। ফলে কোনো কাজে আসছে না ভোটার কার্ড। এ কারণে শিউলী বেঁচে থেকেও নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। জাতীয় পরিচয়পত্রের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এমন ভুলে হতবাকও তিনি। এমন ঘটনাটি ঘটেছে নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায়। শিউলী বিবি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ছয়বাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার স্বামীর নাম মো. আবির আকন্দ। উপজেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালে রাণীনগর উপজেলায় ভোটার হালনাগাদ করা হয়। ওই সময় সদর ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ছয়বাড়িয়া গ্রামের হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহের দায়িত্বে ছিলেন সিম্বা ইউনাইটেড উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাহবুবে সালাম খান। তিনি ওই গ্রামে তথ্য সংগ্রহ করেন।

হালনাগাদে তথ্য সংগ্রহকারী ও সুপারভাইজারের দেওয়া তথ্যে এবং মেম্বারের শনাক্ত করার প্রেক্ষিতে ছয়বাড়িয়া গ্রামের শিউলী বিবির মৃত্যুর তথ্য ভোটার তালিকায় হালনাগাদ করা হয়। শিউলী বিবি জানান, তারা দরিদ্র মানুষ। তার পরিবার সরকারের দেওয়া ১০ টাকা কেজি চাল পেয়ে আসছে। গত ছয় মাস আগে ডিলারের কাছে চাল নিতে গিয়ে তিনি আর চাল পাননি। এ সময় তার চাল না পাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তার ভোটার আইডি কার্ড অনলাইনে আসছে না বলে জানতে পারেন। এরপর তিনি উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে জানতে পারেন ভোটার তালিকায় তিনি মৃত এবং তালিকা থেকে তার নাম কর্তন হয়ে গেছে। শিউলী বিবি আরও জানান, আমি জীবিত থাকার পরেও ভোটার তালিকায় মৃত হওয়ায় নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। এমন ঘটনায় আমি হতবাকও। ভোটার তালিকায় নাম পুনর্বহালের জন্য উপজেলা নির্বাচন অফিসে আবেদন করেছি। নাম পুনর্বহাল করতে দ্বারে দ্বারে ঘুরেও এখনো কাজ হয়নি। এ ঘটনার দ্রুত সমাধান করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। শিউলীর স্বামী আবির আকন্দ জানান, তার স্ত্রী জীবিত থাকার পরেও যারা ভোটার তালিকায় ভুল তথ্য দিয়ে মৃত বানিয়েছেন তদন্তসাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তিনি। জানতে চাইলে ভোটার হালনাগাদ তথ্য সংগ্রহকারী শিক্ষক মাহবুবে সালাম খান বলেন, এটা ভুলবশত হয়ে গেছে। আমরা তার নাম পুনর্বহাল করা চেষ্টা করছি। এদিকে মেম্বার ইসলাম আকন্দ বলছেন, হালনাগাদের সময় তথ্য সংগ্রহকারী শিক্ষক অনেক কাগজপত্র নিয়ে এসে স্বাক্ষর নিয়ে গেছেন। ওই সময় আমি বিষয়টি বুঝতে পারিনি। রাণীনগর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল মোমিন বলেন, তথ্য সংগ্রহকারীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে শিউলী বিবির নাম ভোটার তালিকা থেকে কর্তন হয়েছে। তিনি নাম পুনর্বহালের জন্য আবেদন করেছেন। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি ভোটার তালিকায় তার নাম পুনর্বহাল করতে। কিন্তু শিউলীর আঙুলের ছাপ আসছে না। তাই বিষয়টি এখনো সমাধান করা সম্ভব হয়নি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি অল্প কিছুদিনের মধ্যে সমাধান হয়ে যাবে।

সর্বশেষ খবর