শনিবার, ১১ মার্চ, ২০২৩ ০০:০০ টা

সড়ক যেন মরণফাঁদ!

সাইফুল ইসলাম বেগ, বিশ্বনাথ

সড়ক যেন মরণফাঁদ!

সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক ‘মরণফাঁদে’ পরিণত হয়েছে। সড়কের পাশে বা অর্ধেক অংশ দখল করে দিনের পর দিন বালু ফেলে রাখায় সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে চলাচলে। যত্রতত্র নিজেদের খেয়ালখুশি মতো বালু-পাথর, ইট-কংক্রিট রেখে রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে অসাধু চক্র। কোথাও মাটি ফেলে সড়কে তৈরি করা হয় প্রতিবন্ধকতা। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা-প্রাণহানি। তবুও অদৃশ্য কারণে প্রাণঘাতী এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেউ। কেবল দুর্ঘটনা ঘটলেই শুরু হয় দায়সারা তোড়জোড়। বুধবার সন্ধ্যায়, বিশ্বনাথ-জগন্নাথপুর সড়কে অবৈধভাবে রাখা বালুর স্তূপে মোটরসাইকেল স্লিপ করে পার্শ্ববর্তী গার্ডওয়ালে ধাক্কা খেয়ে নিহত হন স্কুলশিক্ষক নাকিব খান। তিনি দেওকলস ইউনিয়নের আকিক খানের ছেলে ও স্থানীয় আল-ফালাহ একাডেমি অ্যান্ড প্রিন্সিপল উইমেন্স কলেজের শিক্ষক। ময়নাগঞ্জ বাজার শেখ মহল কমিউনিটি সেন্টারের অদূরে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর এটাকে রীতিমতো হত্যাকাণ্ড আখ্যায়িত করে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে সোশ্যাল মিডিয়ায়। পরদিন দুপুরে উপজেলা প্রশাসন ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বালু অপসারণের নির্দেশ দেন। পরে বিকালে ঘটনাস্থল থেকে ফেসবুক লাইভে সবাইকে সতর্কবার্তা দেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এমাদ উদ্দিন খান। সরেজমিন দেখা যায়, সড়কের অর্ধেক পথ জুড়েই রাখা হয়েছে বালুর স্তূপ। রাতে এখানেই দুর্ঘটনার শিকার হন স্কুলশিক্ষক নাকিব খান। স্তূপের পাশেই সড়কে দেখা যায় রক্তের দাগ। ভাঙা গার্ডওয়ালের আংশিক অংশ। তখনো বালু অপসারণ করেনি কেউ। স্থানীয়রা জানান, রাতে তড়িঘড়ি করে সড়কের মাঝখান থেকে কিছু বালু সরিয়ে নেওয়া হয়। এখানে বালু রেখে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছিলেন সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। স্থানীয় কাশিমপুর গ্রামের সিদ্দেক খাঁর জামাতা শমসের।

উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, বিশ্বনাথ জগন্নাথপুর সড়কের বিভিন্ন এলাকা, বাইপাস সড়ক, কলেজ রোড, রামপাশা রোড, খাজান্সি রোডের বিভিন্ন স্থানে সড়ক দখল করে রাখা হয়েছে বালু। কোথাও ব্যস্ততম সড়কেই ট্রাক দাঁড় করিয়ে দিব্যি চলে লোডিং-আনলোডিং। বালু গাদা থেকে প্রতিনিয়ত উড়ছে ধুলাবালি। শমসেরই অবৈধভাবে বালির স্তূপ রাখার কথা স্বীকার করেন। ইউপি চেয়ারম্যান এমাদ উদ্দিন খান বলেন, নির্দেশনা পেলেও আমি মামলা দিই কীভাবে? মামলা দেবেন ভিকটিমের পরিবার। আমি সবাইকে সচেতন করার উদ্যোগ নিচ্ছি। এ বিষয়ে কথা হলে বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত জাহান বলেন, শিক্ষক নিহতের ঘটনায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বালু অপসারণের পাশাপাশি স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রাস্তার ওপর বালি স্তূপ করে রাখার ফলে অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনা ঘটছে। রাস্তার বালি সরিয়ে নেওয়া জরুরি। আমরা মাইকিং করে সবাইকে অবগত করছি। এর পরও না সরালে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর