বৃহস্পতিবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২৩ ০০:০০ টা

ভালো নেই শেরপুরের মৃৎশিল্পীরা

মাসুদ হাসান বাদল, শেরপুর

ভালো নেই শেরপুরের মৃৎশিল্পীরা

শেরপুরের মৃৎশিল্পীদের তৈরি মাটির পণ্য -বাংলাদেশ প্রতিদিন

আধুনিকতা ও বিশ্বায়নের ফলে বাঙালি সংস্কৃতির অংশ মৃৎশিল্প হারিয়ে যাওয়ার পথে। তার ওপর মহামারি করোনা এ শিল্পকে লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। সব মিলিয়ে ভালো নেই শেরপুরের মৃৎশিল্পীরা। প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে পূর্বপুরুষের পেশা অনেকেই ছেড়ে দিয়েছেন। শখ, বংশগত ঐতিহ্য ধরে রাখতে যে কজন এ শিল্প আঁকড়ে আছেন তারা পয়লা বৈশাখ ঘিরে মাটির পণ্য তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

মৃৎশিল্পীরা বলেছেন, এক সময় তাদের পণ্য গ্রাম-শহরের মানুষ ব্যবহার করত। বছরব্যাপী পণ্যের চাহিদা ছিল। প্রযুক্তি ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় মাটির তৈরি পণ্য এখন শুধুই শখের বস্তু। কাজের সঠিক মূল্য না পাওয়া এবং পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে দিন দিন হারিয়ে যেতে বসেছে এ শিল্প। জানা যায়, সদর উপজেলার ভাতশালা ইউনিয়নের পালপাড়া, বাহারির পাড়া, চেঙ্গুরিয়া, ঝিনাইগাতী উপজেলার চাপা ঝোড়ায় একসময় হাজার হাজার মানুষ মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িত ছিল। এখন সব মিলিয়ে ৩ শতাধিক নারী-পুরুষ এ পেশায় আছেন। উদ্যোক্তা কমিউনিটি শেরপুরের প্রধান সমন্বয়ক ইমরান হাসান রাব্বী বলেন, মৃৎশিল্প এখন বিলুপ্তির পথে। এ ঐতিহ্য ধরে রাখতে এখনো কয়েকজন আছেন। সারা বছর এ ব্যবসায় মন্দা থাকলেও বৈশাখী মেলায় বেশি পণ্য বিক্রি করে লাভ করবেন এমনটাই প্রত্যাশা এই উদ্যোক্তার। জেলা মহিলা ও শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা লুতফুন কবির বলেন, এ শিল্পে জড়িতের বেশির ভাগই নারী। তাদের আর্থিক সহযোগিতার কিছু সুযোগ আছে। তিনি তাদের সঙ্গে কথা বলে দেখবেন কী সহযোগিতা করা যায়। জেলা বিসিক কর্মকর্তা বিজয় কুমার দত্ত বলেন, মৃৎশিল্প আবহমান গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য। প্লাস্টিক পণ্যের সঙ্গে এ শিল্প তাল মেলাতে পারছে না। শিল্পটি টিকিয়ে রাখতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যে কোনো পরামর্শ ও সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে তাদের সহায়তা করা হবে।

শেষ মুহূর্তে কর্মচাঞ্চল্য হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, বংলা নববর্ষ ঘিরে শেষ মুহূর্তে কর্মচাঞ্চল্য বেড়েছে হবিগঞ্জের মৃৎশিল্পীদের। সারা বছর মাটির তৈরি পণ্যের তেমন কেনাবেচা না হলেও বছরের এ সময়টায় বেশ ভালো বিক্রির প্রত্যাশা তাদের। শিল্পীদের এখন একটাই টার্গেট, নববর্ষের মেলা আর বান্নিগুলো। যেখানে বিক্রি হবে তাদের হাতের নিপুণ ছোঁয়ায় তৈরি মাটির পণ্যগুলো। এবার জেলায় সব মিলিয়ে অন্তত ২ কোটি টাকার মাটির পণ্য বিক্রি হবে বলে প্রত্যাশা শিল্পীদের। যদিও আধুনিক সব তৈজসপত্রের ভিড়ে দিন দিন হারাতে বসা এ শিল্পটি বাঁচিয়ে রাখতে সরকারি প্রণোদার দাবি জানিয়েছেন তারা। হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান বলেন, মৃৎশিল্প বাঙালির ঐতিহ্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। এ শিল্প টিকিয়ে রাখতে যা প্রয়োজন জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব করা হবে।

সর্বশেষ খবর