মঙ্গলবার, ২৩ মে, ২০২৩ ০০:০০ টা

ক্লুলেস হত্যার রহস্য উন্মোচন

সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের নাসরিন আক্তার (৪০) ক্লুলেস হত্যার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করেছে হত্যা মামলার মূল ঘাতক কমল ওরফে কুদ্দুসকে (৩৫)। নাসরিন আক্তারের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে গিয়ে ব্লাকমেলিংয়ের শিকার হওয়ায় ক্ষোভের জের ধরে হাত-পা বেঁধে গলায় লালসালু পেঁচিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। গতকাল দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কনফারেন্স কক্ষে জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, এটি ছিল সম্পূর্ণ একটি ক্লুলেস মার্ডার। পুলিশ তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে এই হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন করে মূল ঘাতক কমল ওরফে কুদ্দুসকে রংপুরের কুড়িগ্রাম থেকে গ্রেফতার করে। বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। পুলিশ সুপার আরও বলেন, ১৯ মে সকালে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন জালকুড়ি পশ্চিমপাড়া সিমা ডাইংয়ের পাশে ফাঁকা বালুর মাঠে নাসরিন আক্তার নামে এক নারীর লাশ হাত ও পা বাঁধা অবস্থায় পাওয়া যায়। এই হত্যার ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় ওই নারীর পিতা আশরাফ দেওয়ান বাদী হয়ে মামলা করেন। এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ তদন্ত শুরু করে। ডিজিটাল তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে নাসরিন হত্যার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করে এবং গত রবিবার চিলমারীতে অভিযান চালিয়ে কমলকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে কমল স্বীকার করেন যে, ১৯ মে রাতে সে ও অভির উদ্দিনসহ জালকুড়ির পাংখা শাহ মাজারে সাপ্তাহিক ওরশে গান শুনতে যায়। ওরশের গান শেষে রাত আনুমানিক সোয়া ৩টায় নাসরিন আক্তারের সঙ্গে পরিচয় হয় ও একসঙ্গে চা পান করে। এরপর অভির উদ্দিনের সঙ্গে ভিকটিমের অর্থের বিনিময়ে একান্ত সময় কাটানোর কথা হলে ভিকটিম সম্মত হয়। এর ধারাবাহিকতায় কমল ও অভির উদ্দিন ভিকটিমকে নিয়ে একটি পরিত্যক্ত ঘরে প্রবেশ করে। এ সময় নাসরিনের মোবাইলে একটি ফোন কল আসে এবং সে মোবাইলে কথা বলতে বলতে বাইরে যায়। তাৎক্ষণিক ঘরে দুজন পুরুষ প্রবেশ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে কমল ও অভির উদ্দিনের কাছ থেকে নগদ ৯ হাজার ৪০০ টাকা নিয়ে যায়। এতে কমল ও অভির উদ্দিন ভিকটিমের ওপর ক্ষিপ্ত হয়। পরবর্তীতে কমল ভিকটিমকে আরও টাকার লোভ দেখিয়ে তাদের সঙ্গে আরও সময় কাটানোর জন্য বলে। নাসরিন রাজি হলে তাকে জালকুড়ি থানাধীন তালতলা খালপাড় বালুর মাঠে নিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে পৌঁছালে কমলের গলায় থাকা লালসালু কাপড় দিয়ে নাসরিনের হাত বেঁধে এবং নাসরিনের গায়ের ওড়না দিয়ে দুই পা বেঁধে লালসালু দিয়ে ভিকটিমের গলায় পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরবর্তীতে কমল ও অভির উদ্দিন দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন ভাড়া বাসায় এসে উভয়ই গ্রামের বাড়িতে চলে যায়। আসামি কমলকে গ্রেফতারের পর তার দেওয়া স্বীকারোক্তি মতে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও ঘটনার সময় আসামির পরিহিত সাদা লুঙ্গি ও গেঞ্জি উদ্ধার করে জব্দ করা হয়।

 

সর্বশেষ খবর