সোমবার, ৫ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

 মেহেরপুরে দালালের খপ্পরে নিঃস্ব অর্ধশত পরিবার

মেহেরপুর প্রতিনিধি

মেহেরপুরে আদম দালালের খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব^ হয়ে পড়েছে অর্ধশত পরিবার। কেউ জাল ভিসায় বিদেশ গিয়ে কাজ না পেয়ে উল্টো দিনের পর দিন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। কেউ বিদেশে যাওয়ার জন্য টাকা দিয়ে দালালের পেছনে ঘুরে ঘুরে ক্লান্ত। মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী গ্রামের নওদা পাড়ার মিলন হোসেন, তারানগর গ্রামের বদর উদ্দিন, সদর উপজেলার বেলেগাড়ি গ্রামের রাজু, জিন্নাত, সজিব, হান্নান, শরিফুলসহ কয়েক গ্রামের ৫০ জন যুবক আদম দালালের খপ্পরে পড়েছেন। যাদবপুর গ্রামের সৌদিফেরত রাসেল বলেন, গ্রামের আদম দালাল বিল্লাল হোসেনের মাধ্যমে সৌদি আরব যাই। যে কোম্পানিতে কাজ দেবে বলে নিয়েছিল সেখানে কাজ না দিয়ে তিন মাস পর এক পাকিস্তানি দালালের কাছে আমাদের বিক্রি করে দেন। দালল বেতন দিত না, খেতে দিত এক বেলা। রমজান মাসে বিকালে দুই ঘণ্টার জন্য বের হতে দিত। আমরা রাস্তার পাশে মিসকিনদের জন্য রাখা খাবার নিয়ে এসে খেতাম। রোজার পর আবার সেই না খেয়ে থাকা। একটি গুদামে একসঙ্গে ৪০০ জন ছিলাম। এর চেয়ে জেলখানা ভালো। সেখানে কষ্ট সহ্য করতে না পেরে ফাঁস নিয়েছেন রোকন নামের একজন। সাত মাস পর সৌদি প্রবাসী শামীম নামের এক দালালের মাধ্যমে আরও ৩ লাখ টাকা খরচ করে বাড়ি ফিরে আসি। মোনাখালী গ্রামের কাজল বিশ্বাস বলেন, আদম দালাল সাগর আলীর ও তার মা লালফাতুন খাতুনের মাধ্যমে সৌদি আরব যাই। সৌদি পৌঁছানোর পর আমরা বুঝতে পারি জাল ভিসায় এসেছি। তিন মাসে কোনো কাজ মেলেনি। পরে পুলিশের কাছে ধরা দিয়ে ১৪ দিন জেল খেটে বাড়ি ফিরে আসি। বিদেশে শ্রমিক পাঠানোর কথা স্বীকার করে সাগর বলেন, ১৮ জনকে পাঠিয়েছি। প্রথম দিকে কোম্পানির একটু সমস্যা হয়েছিল। বিদেশে শ্রমিক পাঠানো কাজের কোনো লাইসেন্স আছে কি না জানতে চাইলে সাগর বলেন, আমার এক মামার মাধ্যমে পাঠাই। আদম দালাল জাহাঙ্গীর বলেন, আমি সঠিক ভিসা দেওয়ার পরও বিদেশ না যাওয়ায় আদালতে কয়েকজনের নামে মামলা করেছি। তিনি স্বীকার করেছেন বিদেশে লোক পাঠানোর তার আইনি কোনো বৈধ অনুমোদন নেই। মেহেরপুর জেলা প্রশাসক আজিজুল ইসলাম বলেন, ভুয়া দালাল বা এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশ না যাওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়ত প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়।

সর্বশেষ খবর