পাহাড়ে পানিবাহিত রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এরই মধ্যে আক্রান্ত হয়েছে ৪ শতাধিক। চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। তাই চিকিৎসা সামগ্রী নিয়ে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী ও বিজিবি। জেলা সিভিল সার্জন বলছেন, আক্রান্ত থাকলেও মৃত্যুর সংখ্যা এখন শূন্য। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নে পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা যায়। ওই ইউনিয়নের লংথিয়ান পাড়া, অরুন কার্বারী পাড়া ও শিয়ালদহ ত্রিপুরা পল্লীসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের নারী-পুরুষ ও শিশুরা আক্রান্ত হতে থাকে ডায়রিয়ায়। গত সপ্তাহে ওই গ্রামে ডায়রিয়ায় দুজনের মৃত্যুর পর নড়েচড়ে বসে রাঙামাটি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় সড়ক যোগাযোগ না থাকায় চিকিৎসা সহায়তায় দল পাঠাতে পারছিল না জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। এ সময় আক্রান্ত সংখ্যা ৪ শতাধিক ছাড়িয়ে যায়। খবর পেয়ে জেলা সিভিল সার্জনের নির্দেশে হেঁটে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি থেকে সাজেক ইউনিয়নের দুর্গম শিয়ালদহর উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে চিকিৎসা কর্মীরা। চিকিৎসাসেবার হাত বাড়িয়ে দেয় বাঘাইহাট সেনা জোন ও ৫৪ বিজিবি। সেনাবাহিনী সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রাম ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি নির্দেশে খাগড়াছড়ি রিজিয়ন কমান্ডারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সেনাবাহিনীর একটি মেডিকেল দল ও অসামরিক প্রশাসনের দুজন স্বাস্থ্যকর্মীসহ ওষুধ, শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ খাবার পানিসহ বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টারে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নে পৌঁছায়। পরে সেখানে মেডিকেল ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হয়। এ ছাড়া ৫৪ বিজিবির চিকিৎসকসহ একটি দল হেঁটে ওষুধ আর খাবার নিয়ে রোগীদের কাছে হাজির হয়। বিজিবির পক্ষ থেকেও একটি অস্থায়ী চিকিৎসা ক্যাম্প পরিচালনা করা হয়। সাজেক ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বনবিহারী চাকমা জানান, পাহাড়ে পানি সংকটের কারণে এ ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ছড়ার অস্বাস্থ্য কর পানি পান করে অনেকে এখন মৃত্যুর মুখে। বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল কর্মকর্তা ডা. অরবিন্দু চাকমা বলেন, সাজেক রাঙামাটির একটি সীমান্তবর্তী এলাকা। এখানে কোনো সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই। তীব্র গরমে হেঁটে দুর্গম পাহাড়ি পথ পাড়ি দেওয়া স্বাস্থ্য কর্মীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তবুও চার সদস্যের একটি মেডিকেল দল পাঠানো হয়েছে সাজেকে। সেনাবাহিনী ও বিজিবি সহায়তার হাত বাড়িয়েছে। যার কারণে রোগীদের দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়েছে।