রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিকভাবে দেশি জাতের গাঁদা ফুলচাষে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন ব্যবসায়ী জাহিদ হাসান তপু। উপজেলার বালিয়াকান্দি ইউনিয়নের ভীমনগর গ্রামের ওই ব্যবসায়ী চলতি মৌসুমে গাঁদা ফুল চাষ করেছেন। তার ফুলের বাগান দেখতে প্রতিদিন দর্শনার্থীরা আসছেন। সরেজমিন দেখা যায়, গাঁদা ফুলের পরিচর্যা করছেন তপু। প্রতিটি গাছেই প্রচুর পরিমাণে ফুল ফুটেছে। পাশের ফরিদপুর জেলার মধুখালী বাজারে সরবরাহ করার জন্য ফুল তুলছেন তপু ও তার ভাইবোন। ফুল চাষে লাভ হওয়ায় পাশের ১ একর জমি লিজ নিয়েছেন তিনি ফুল চাষের জন্য।
তপুর ফুলবাগান দেখতে আসছেন অনেক দর্শনার্থী। তারা বলেন, আমাদের ধারণা ছিল ফুল চাষ শুধু যশোর জেলার গদখালীতে হয়। কিন্তু সেই ধারণা পাল্টে দিয়েছেন তপু। তার ফুলবাগানে বাসন্তী গাঁদা, রক্ত গাঁদা, গোলাপ, রজনীগান্ধা রয়েছে। ফুলগাছে প্রচুর ফুল ধরছে। অনেক কৃষক তার সঙ্গে পরামর্শ করছেন ফুল চাষের জন্য।
ফুলচাষি তপু বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমি বালিয়াকান্দি উপজেলার গেটে ফুলের ব্যবসা করি। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমাকে ফুলের তোড়া ও ডালা সরবরাহ করতে হয়। অনেক সময় যশোর থেকে ফুল আসতে দেরি হয়। সেই কারণে আমাকে অনেক কথা শুনতে হয়। সেখান থেকে মাথায় আসে ফুল চাষের। এরপর যশোর জেলার গদখালী যাই। সেখান থেকে ধারণা নিয়ে আসি ফুলচাষের। বাড়িতে ফুলচাষের কথা বললে বাবা বাধা দেয়। এরপর লিজ নিয়ে ২২ শতাংশ জমিতে ফুলচাষ করি। আমার বাগানে এখন বাসন্তী গাঁদা ধরেছে। প্রতি পিস গাঁদা পাইকারি ৭৫ পয়সা ও খুচরা ১ টাকা করে বিক্রি করছি। প্রথম সপ্তাহে ১৩ হাজার টাকা, দ্বিতীয় সপ্তাহে ১৫ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করেছি। ফুল চাষের জন্য ১ একর জমি লিজ নিয়েছি। বর্তমানে বীজ ও কলম রয়েছে আমার বীজতলায়। আশা করছি- রাজবাড়ী জেলাতে ফুলের চাহিদা আমি মেটাতে পারব।
ফুল শুধু গদখালীতে হয় এ ধারণা ভুল। গাঁদা ফুলের পাশাপাশি সব ধরনের ফুলের চাষ রাজবাড়ীর মাটিতে করা সম্ভব বলে জানান তপু।
রাজবাড়ীতে ফুল ব্যবসা করেন কালাম মণ্ডল। তিনি বলেন, যশোর ও সাতক্ষীরা থেকে ফুল আনতে আমাদের অনেক খরচ হয়। রাজবাড়ীতে ফুল চাষ হলে আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হবে। নিজ জেলা থেকে ফুল ক্রয় করে বিক্রি করলে আমরাও লাভবান হব। রাজবাড়ীতে ফুল চাষের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে কৃষিবিভাগের তৎপরতা বৃদ্ধির দাবি ফুল ব্যবসায়ী কালাম মণ্ডলের।
বালিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, বালিয়াকান্দি পাট ও পিঁয়াজ চাষের জন্য বিখ্যাত। কেউ অন্য চাষের দিকে যেতে চায় না। তপু সাহস করে উদ্যোগ নিয়েছে ফুল চাষের। প্রথমেই তিনি সাফল্য অর্জন করেছেন। তার ফুলবাগান আমরা পরিদর্শন করেছি। তপুর পাশে কৃষিবিভাগ সব সময় থাকবে।
