মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

জলাবদ্ধতায় অনাবাদি তিন ফসলি জমি

দাউদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধি

জলাবদ্ধতায় অনাবাদি তিন ফসলি জমি

দাউদকান্দি উপজেলায় মোট ফসলি জমির পরিমাণ ১৬ হাজার হেক্টর। এর মধ্যে জলাবদ্ধতার কারণে প্রায় ১ হাজার হেক্টর তিন ফসলি জমি অনাবাদি হয়ে পড়েছে। বিস্তীর্ণ এ জমি ভরে গেছে কচুরিপানা আর আগাছায়। এক দশক আগেও এসব জমিতে ইরি ধানসহ বিভিন্ন ফসল চাষ হতো। মাঠজুড়ে ছিল ফসলের সমারোহ। সরেজমিন উপজেলার গৌরীপুর, জিংলাতুলি, বারপাড়া, সুন্দলপুর ইউনিয়নে দেখা যায়, জলাবদ্ধতার কারণে অনেক জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে না। জানা যায়, গোমতী ও কালাডুমুর নদীর সংযোগস্থল থেকে সুন্দলপুর সেচ প্রকল্প নামে একটি খাল বয়ে গেছে গৌরীপুর, বারপাড়া, সুন্দলপুর ও গোয়ালমারীর ওপর দিয়ে। উল্লিখিত এলাকার কৃষি জমিতে এই খালের পানি দিয়েই চাষাবাদ হতো। আবার এই খালই পানি নিষ্কাশনের একমাত্র মাধ্যম। কয়েক বছর ধরে খালের মুখ ময়লা-আবর্জনা বন্ধ হয়ে গেছে। স্থানীয় কৃষক ও পরিবেশবিদরা মানববন্ধনসহ আন্দোলন করেও খালের মুখে ময়লা ফেলা বন্ধ করতে পারেনি। পেন্নাই গ্রামের কৃষক আলাউদ্দিন বলেন, বর্ষার পানি সঠিক সময় না নামায় আমাদের জমিগুলো দীর্ঘদিন ধরে চাষ করতে পারছি না। ইছাপুর গ্রামের কৃষক শাহাবুদ্দিন বলেন, আগে জমি কিনে বর্গা দিতাম। তাতে নিজেদের খাবারের চাল হয়ে যেত। কয়েক বছর ধরে জমি বর্গা নেওয়ার লোক পাই না। এখানে শুধু আমার নয়, আরও অনেকের জমিতে জলাবদ্ধতার কারণে আগাছায় ছেয়ে আছে। বারপাড়া ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাবিহ উল্লাহ বলেন, ইছাপুর পূর্ব এবং পশ্চিম পাশের খাল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এখানকার জমিগুলো অনাবাদি থাকে।

খালের প্রবাহ বন্ধ হওয়ার কারণ হিসেবে অপরিকল্পিত বাড়ি নির্মাণ, পুকুর খনন এবং সংযোগস্থল ভরাটকে দায়ী করেন তিনি। পেন্নাই এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা শেখ আবদুল বাতেন বলেন, আমার ব্লকের প্রধান সমস্যা হলো জলাবদ্ধতা। খালের মুখটি বন্ধ থাকায় জলাবদ্ধতায় তিন ফসলি জমি অনাবাদি পড়ে আছে। বঙ্গববন্ধু জাতীয় কৃষি পদকপ্রাপ্ত কৃষি ও পরিবেশবিদ অধ্যাপক মতিন সৈকত বলেন, খালের মুখ বন্ধ থাকায় বর্ষার পানি আসে দেরিতে, যায়ও দেরিতে। এ জন্য দাউদকান্দির বিভিন্ন এলাকার অনেক ফসলের মাঠ অনাবাদি থাকে। দাউদকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ বিপুল হোসেন বলেন, আমি এখানে যোগদান করেছি মাত্র এক মাস হয়েছে। জলাবদ্ধতার সমস্যা নিরসনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে অনাবাদি জমি চাষের আওতায় আনার চেষ্টা করা হবে। দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মহিনুল হাসান বলেন, গৌরীপুর বাজারের ময়লা-আবর্জনায় বন্ধ হওয়া গোমতী নদীর সঙ্গে সংযোগ খালের মুখ সচল করতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ খবর