লালমনিরহাটের আদিতমারির গোবর্ধন চরে কোনো স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা কমিউনিটি ক্লিনিক নেই। অথচ এ চরে বসবাস প্রায় ২০ হাজার মানুষের। প্রাথমিক চিকিৎসা পেতেও ঘোড়ার গাড়ি এবং নৌকায় চড়ে দুর্গম চর ও নদী পার হয়ে যেতে হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা জেলা সদর হাসপাতালে। গুরুতর অসুস্থ অনেকে হাসপাতালে নেওয়ার পথেই মারা যান। শুধু এ চরই নয়, জেলার তিস্তা-ধরলা বিধৌত অন্তত ২৪টি চরে নেই কোনো স্বাস্থ্য কেন্দ্র। মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে বসবাস করতে হয় এসব চরের বাসিন্দাদের। তিস্তা-ধরলা চরাঞ্চলবাসীদের অভিযোগ, সেখান থেকে আদিতমারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা জেলা সদর হাসপাতালে যেতে অনেক সময় নৌকা পাওয়া যায় না, পড়তে হয় ভোগান্তিতে। বিশেষ করে জরুরি সময়ে গুরুতর অসুস্থ, প্রসূতি মা ও শিশুরা পান না প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা। শিশুদের টিকা দেওয়া সম্ভব হয় না। মৃত্যু ঝুঁকিতে থাকেন এই এলাকার মানুষ। গোবর্ধন চরের মো. হারুন মিয়া (৪৫) বলেন, চর এলাকায় কোনো চিকিৎসক পাওয়া যায় না, অনেক সময় নৌকাও পাওয়া যায় না। গর্ভবতী নারীর প্রসব ব্যথা উঠলে চিকিৎসার অভাবে অনেকে মারা যায়। বহুদিন ধরে একটা ক্লিনিকের দাবি করে আসতেছি। এখনো কোনো ফল পাইনি। ওই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য মো. জমির আলী বলেন, এই এলাকায় প্রায় ২০ হাজার মানুষের বসবাস। সবাই স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত। এ এলাকায় কোনো স্বাস্থ্য কর্মীও আসে না। চরে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের জোর দাবি জানান তিনি। একই এলাকার জামিলা আক্তার বলেন, এখানে ক্লিনিক না থাকায় আমি বাচ্চাকে টিকা দিতে পারতেছি না। বাচ্চারা অসুস্থ হলে আমাদের খুব বেগ পেতে হয়। হাসিনা বেগম (৩০) বলেন, নদী পার হতে হতে কেউ কেউ মারাও যায়। একটা ক্লিনিক থাকলে আমাদের এরকম অসুবিধা হতো না। লালমনিরহাট সদরের তিস্তায় জেগে উঠা চর রাজপুরের বাসিন্দা ওমর আলী (৬৬) বলেন, জীবনই শেষ করলাম। তবুও চরে পেলাম না কোনো স্বাস্থ্য কেন্দ্র। সরকার যায়, সরকার আসে কিন্তু চরের মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয় না। এ চরে বাস করেন প্রায় ২৪ হাজার মানুষ। এখানে কেউ অসুস্থ হলে যেতে হয় রংপুরের হারাগাছ, কাউনিয়া অথবা লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে। গুরুতর অসুস্থ কাউকে হাসপাতালে নিতে রাস্তাতেই মারা যান। এ বয়সে তিনি এমন মৃত্যু দেখেছেন আটটি, বললেন ওমর আলী। এমন দুঃসহ জীবনযাপন থেকে মুক্তি চান চরের বাসিন্দারা। সিভিল সার্জন ডা. আবদুল হাকিম বলেন, ওই এলাকার যে কোনো ব্যক্তি ৮ শতক জমি দান করলে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা সম্ভব। এ ছাড়া আপাতত এসব এলাকায় কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন সম্ভব নয়। জেলা প্রশাসক রকিব হায়দার বলেন, সেসব চরে স্বাস্থ্য কেন্দ্র নেই, তার তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হয়ে এলেই জমি প্রাপ্তি সাপেক্ষে স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে।
শিরোনাম
- বিমানবন্দরে গ্রেফতার জনপ্রিয় ইউটিউবার ‘ডাকি ভাই’
- পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামি ছিনতাই, গ্রেফতার ৩
- ১৩ ঘণ্টা পর রাজশাহী-রহনপুর রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
- অর্থনৈতিক মন্দা ও সরকারি ব্যয়
- বসুন্ধরা কিংসের তাঁবুতে কিউবা
- আমরা ভারত-পাকিস্তান পরিস্থিতির উপর ‘প্রতিদিন’ নজর রাখছি: মার্কো রুবিও
- সারাদেশে বিশেষ পুলিশি অভিযান, গ্রেফতার ১৬২৯
- শাহজালালে ৭৬ ভরি সোনার গয়নাসহ তিনজন আটক
- ওয়াকিটকি ক্রয়ে অনিয়ম : ডিএনসিসিতে দুদকের অভিযান
- চট্টগ্রামে অস্ত্র মামলায় একজনের ১৭ বছর কারাদণ্ড
- নিউইয়র্কে ক্লাবে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ৩
- চিকিৎসকদের নিয়ে বক্তব্য : দুঃখ প্রকাশ করলেন আসিফ নজরুল
- ড্র দিয়ে মৌসুম শুরু করল চেলসি
- ফিলিস্তিনিদের পাশে দাঁড়ানোয় বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানালেন রাষ্ট্রদূত
- মহাখালীর ফিলিং স্টেশনের আগুন নিয়ন্ত্রণে
- বগুড়ায় ডোবা থেকে পরিত্যক্ত ৬ গ্রেনেড উদ্ধার
- করতোয়া নদী দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু
- ছিনতাই করে পালালেও শেষ রক্ষা হয়নি
- বাউবিতে হিসাব, নিরীক্ষা ও আর্থিক ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রশিক্ষণ শুরু
- বড়াইগ্রামে বজ্রপাতে কৃষকের মৃত্যু
স্বাস্থ্য কেন্দ্র নেই চরে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে বসবাস
তিস্তা-ধরলার ২৪ চরের মানুষ ভোগান্তিতে
রেজাউল করিম মানিক, লালমনিরহাট
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর