মঙ্গলবার রাতে ঢাকার আশুলিয়ায় নিহত শিল্প পুলিশ কনস্টেবল মুকুলের গ্রামের বাড়ি বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার রহবল উত্তরপাড়াতে এখন চলছে শোকের মাতম।
আজ বুধবার বিকাল পর্যন্ত তার লাশ এলাকায় পৌঁছায়নি। গ্রামের বাড়িতে দরিদ্র পিতা শাহিদুর ইসলাম নিহত মুকুলের বাবা বার বার ছেলের নাম নিয়ে মূর্ছা যাচ্ছেন। মা মুর্শেদা বেগম বাক হারিয়ে ছেলের ছবি হাতে শুধু তাকিয়ে আছেন। ছোট ভাই জিসান বাবু, ছোট বোন মিষ্টি ও সম্পা প্রলাপ বকে যাচ্ছেন। প্রতিবেশীরা সান্ত্বনা দিলেও শোক থামছে না। ৬ সদস্যের সংসারে বাবা শাহিদুল ইসলাম অন্যের জমিতে চাষাবাদ করেন। মা মোর্শেদা গৃহিণী। জিসান বাবু রংপুর কারমাইকেল কলেজে একাদশ শ্রেণিতে, ছোট বোন সম্পা খাতুন স্থানীয় রহবল দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে এবং সবার ছোট বোন মিষ্টি খাতুন রহবল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছে।
নিহত মুকুলের ভাই জিসান বাবু জানান, ‘প্রায় ৫ বছর পূর্বে মুকুল (ভাই) পুলিশে যোগদান করেন। এর পর থেকে তার বেতনের টাকায় সংসার চলতো। ছোট ভাই ও বোনদের পড়াশোনার খরচসহ যাবতীয় খরচ চলতো। পরিবারের সদস্যদের মাঝে শুধু নিহত মুকুলই ছিল উপার্জনকারী। এখন সংসার চলবে কি করে? দুর্বৃত্তরা তার ভাইকে মারেনি, মেরেছে পুরো পরিবারকে।
তিনি আরো জানান, মাত্র চার বিঘা জমি তার বাবার সম্পদ। এর মধ্যে ১৫ শতক জায়গার ওপর বসতবাড়ি। বাকি সম্পত্তিগুলো অভাবের কারণে বন্ধক রাখা হয়েছে। ভাই সে সব সম্পত্তিগুলো ধীরে ধীরে টাকা দিয়ে ছাড় করে নিতে চেয়েছিল। ভাই সেটা করতে পারলো না। মা, বাবাকে সুখে রাখা আর বোনদেরকে বিয়ে দেয়ার স্বপ্ন ভাইয়ের পূরণ হলো না।
বগুড়ার শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আহসান হাবীব জানান, মুকুলের মরদেহ বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আসেনি। শুনেছি মুকুলের মরদেহ বগুড়ায় তার পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করার সকল প্রস্তুতি কর্তৃপক্ষ নিয়েছে।
বিডি-প্রতিদিন/৪ নভেম্বর ২০১৫/শরীফ