নোয়াখালীর চাঞ্চল্যকর কিশোর শামছুদ্দিন মিলন হত্যা মামলায় গোয়েন্দা পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করেনি আদালত। নতুন করে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সিআইডিকে। বৃহস্পতিবার জেলার ২ নং আমলী আদালতে ইতিপূর্বে গোয়েন্দা পুলিশের দাখিল করা চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানী শেষে জেষ্ঠ্য বিচারিক হাকিম ফারজানা ভূঁইয়া এই আদেশ দেন। আদেশে সিআইডিকে আগামী ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এর আগে গত ২৯ জুলাই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনের উপর শুনানী শেষে জেষ্ঠ্য বিচারিক হাকিম সমরেশ কুমার শীল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও বাদীকে আজকের শুনানীতে হাজির থাকার আদেশ দেন। আদালত একইসঙ্গে মামলার সিডি (কেস ডায়রি) তলব করে।
২০১১ সালের ২৭ জুলাই নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরকাঁকড়া ইউনিয়নের টেকের বাজারে পুলিশের গাড়ি থেকে নামিয়ে একদল লোক কিশোর শামসুদ্দিন মিলনকে ডাকাত সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করে। একই বছরের ৩ আগস্ট নিহত মিলনের মা কহিনূর বেগম বাদী হয়ে আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে ৮ আগস্ট কোম্পানীগঞ্জ থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে মামলাটি গ্রহণ করা হয়। এরপর তদন্তের ভার পড়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওপর। গত চার বছরে ৫২ বার সময় নিয়ে জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন গোয়েদা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, ডিবি) মো. আতাউর রহমান ভূঁইয়া।
এর আগে এই মামলায় স্থানীয়ভাবে মোবাইল ফোনে ধারণকৃত ভিডিও চিত্র দেখে গণপিটুনীতে অংশ নেয়া ২৬ জন আসামিকে সনাক্ত করে পুলিশ। যাদের মধ্যে পাচজনকে আটকের পর দুইজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে কোম্পানীগঞ্জ থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, এক উপ পরিদর্শক ও দুই কনষ্টেবলকে সাময়িক বরখাস্ত করে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়। অভিযুক্তরা বর্তমানে নোয়াখালীসহ দেশের বিভিন্ন থানায় কর্মরত রয়েছেন।
নোয়াখালীর জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর এটিএম মহিব উল্লা জানান, হতাশা আর প্রভাবশলীদের চাপে পড়ে মিলনের মা কহিনূর বেগম গত ২৪ ডিসেম্বর আদালতে অভিযোগ প্রত্যাহারের আবেদন দাখিল করেন। পারিবারিক অভাব অনটন ও স্বামীর চাপে এজন্য অভিযুক্তদের দেয়া পাঁচ লাখ টাকা গ্রহণ করার কথা জানান কহিনূর বেগম।
বিডি-প্রতিদিন/০৫ নভেম্বর ২০১৫/এস আহমেদ