সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনের দ্বন্দ্বে পূর্ব বিরোধের জেরে নিজ বিদ্যালয়ের সন্নিকটে দুর্বৃত্তদের হামলায় খুন হয়েছেন নেত্রকোনার বারহাট্টা মনাস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অর্জুন বিশ্বাস (৪২)। আজ বুধবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তিনি রামপুর দশাল গ্রামের ক্ষিতিশ বিশ্বাসের ছেলে। এ ঘটনায় শিক্ষক ও স্থানীয়দের মাঝে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে। পুলিশ দুপুরে এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঘটনায় জড়িতদের মধ্যে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ফোয়দ খান বাবুলকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মনাস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গত কয়েকমাস পূর্বে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির পদ নিয়ে প্রধান শিক্ষকের সাথে স্কুল কমিটির সদস্য ফোয়াদ খান বাবুল ও স্থানীয় ইউপি মেম্বার কাশেমের ভাই কালাচানের সঙ্গে বিবাদ চলে আসছিল। এর জের ধরে পোয়দ এবং কালাচাঁন শিক্ষককে হুমকি প্রদান করে।
নিহতের ভাই ছোট কাজল জানান, গত মঙ্গলবার রাতে মোবাইল ফোনে প্রদান শিক্ষকের কাজকর্ম ভালো না বলে হুমকি প্রদান করে। এরপর আজ বুধবার নিজ বাড়ি রামপুর দশাল থেকে সকাল ৯টার দিকে মোটরসাইকেল যোগে বড় ভাই স্কুলে রওয়ানা দেন। সকাল পৌনে ১০টার দিকে স্কুলে পৌছার পূর্বেই পূর্ব থেকে ওত্ পেতে থাকা কালাচান ও ফোয়াদ লোকজন নিয়ে চলতি অবস্থায় হাতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপ দেয়। এ সময় মোটর সাইকেল থেকে পড়ে গেলে দুর্বৃত্তরা পায়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। খবর পেয়ে স্কুলের শিক্ষক ও অন্যরা দ্রুত বারহাট্টা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্কুলের সহকারী শিক্ষক শহিদুল হক ভাসানী জানান, এমন নৃশংস ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষকদেরকে যথাযথ সন্মান প্রদর্শন করতে হবে।
এ ঘটনায় সকাল থেকেই শিক্ষক ও স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হওয়ায় বারহাট্টা উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষক-ছাত্র-অভিভাবকরা।
বারহাট্টা থানার ওসি সালেমুজ্জামান জানান, মনাস প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদ নিয়ে স্থানীয় কাশেম মেম্বারের ছোট ভাই কালাচান ও বাবুলদের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে এ ঘটনা ঘটে।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান প্রামাণিক জানান, ঘটনার মূল হোতা বাবুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অচিরেই বাকীরা ধরা পড়বে।
বিডি-প্রতিদিন/২ ডিসেম্বর ২০১৫/শরীফ