বগুড়ায় পৌরসভা নির্বাচনকে ঘিরে প্রচার প্রচারণা জমে উঠেছে। প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ায় ভোটার ও সমর্থকদের মধ্যেও নির্বাচনী হাওয়া বইছে দিগুণহারে। প্রধান দুই দলের প্রার্থী চূড়ান্ত হলেও জেলা জাতীয় পার্টিতে প্রার্থী নিয়ে সংকটে রয়েছে। জেলার ১২টি পৌরসভার মধ্যে সীমানা ও মেয়াদ শেষ না হওয়ায় ৩টি বাদে ৯টি পৌরসভায় নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন নিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গণসংযোগ শুরু করেছেন। প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে কাউন্সিলর প্রার্থীরাও।
জানা যায়, ৩০ ডিসেম্বর বগুড়ার ৯ পৌরসভার নির্বাচন কেন্দ্র করে প্রার্থীদের পদচারণায় সরব বগুড়া জেলার পৌর এলাকাগুলো। বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করছেন তারা। নির্বাচনে এবারই প্রথম দলীয় প্রতীকে ভোট গ্রহণ হবে। তাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ৯টি পৌরসভায় তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। পাশাপাশি বিএনপির একক প্রার্থী চূড়ান্ত হলেও প্রার্থী সংকটে রয়েছে জাতীয় পার্টি। সংসদের বিরোধী দল জেলার কোনো পৌরসভাতে এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, বগুড়ার ১২টি পৌরসভার মধ্যে ৯টিতে ৩০ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ করা হবে। বাকি তিনটির মধ্যে সোনাতলা পৌরসভা সীমানা জটিলতা এবং দুপচাঁচিয়া ও তালোড়া পৌরসভার মেয়াদ শেষ না হজওয়ায় আপাতত নির্বাচন হচ্ছে না। অপর ৯টি পৌরসভার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়া প্রার্থীরা এখন ভোটারদের দ্বারে।
বগুড়ার ৯টি পৌরসভায় ইতিমধ্যেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একক প্রার্থী নির্ধারণ করেছে। জেলা আওয়ামী লীগ আলোচনা সভার মধ্য দিয়ে প্রার্থী নির্ধারণ করে কেন্দ্রে নামের তালিকা পাঠিয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন জানান, জেলার ৯ টি পৌরসভায় দলীয়ভাবে একক প্রার্থী নির্ধারণ করা হয়েছে। বগুড়া পৌরসভায় অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম মন্টু, কাহালুতে হেলাল উদ্দিন কবিরাজ, শিবগঞ্জে তৌহিদুর রহমান মানিক, সারিয়াকান্দিতে আলমগীর শাহী সুমন, নন্দীগ্রামে রফিকুল ইসলাম পিংকু, ধুনটে শরিফুল ইসলাম, শেরপুরে আব্দুস ছাত্তার, সান্তাহারে রাশেদুল ইসলাম রাজা এবং গাবতলীতে মোমিনুল ইসলাম শিলু।
জেলা বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক মীর শাহে আলম জানান, বগুড়ার ৯টি পৌরসভায় একক মেয়র প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই কেন্দ্র থেকে তাদের মনোনয়নপত্র দেয়া হয়েছে। বগুড়া পৌরসভায় অ্যাডভোকেট একেএম মাহবুবর রহমান, কাহালুতে আলহাজ্ব আব্দুল মান্নান, শিবগঞ্জে মতিয়ার রহমান মতিন, সারিয়াকান্দিতে টিপু সুলতান, নন্দীগ্রামে সুশান্ত কুমার শান্ত, ধুনটে আলীমুদ্দিন হারুন, শেরপুরে স্বাধীন কুমার কুন্ডু, সান্তাহারে তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টু, গাবতলীতে সাইফুল ইসলাম সাইফ।
এদিকে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির জেলায় ৪টি আসনে সংসদ সদস্য থাকলেও মেয়র পদে প্রার্থী সংকট দেখা দিয়েছে। এখনো কোনো প্রার্থীর নাম জাপা ঘোষণা করেনি।
জেলা আওয়ামী লীগের একক প্রার্থী বগুড়া পৌরসভায় অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম মন্টু জানান, ‘পূর্বেও আমি বগুড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। এবার মেয়র হিসেবে বগুড়া পৌরসভার সার্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবো। আমি বিগত দিনে যে উন্নয়ন করেছি তার চেয়েও দিগুণ উন্নয়নমূলক কাজ করতে চাই।'
বগুড়া জেলা বিএনপি মনোনিত মেয়র প্রার্থী এবং বর্তমান বগুড়া পৌর মেয়র অ্যাডভোকেট. একেএম মাহবুবর রহমান বলেন, ‘বগুড়া পৌরসভার উন্নয়নে আমি কাজ করেছি। আগামীতে আরো কিছু কাজ করতে চাই। বগুড়া পৌরসভায় টানা গত দুই মেয়াদে পৌর মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। পৌরবাসীর ভোটের মাধ্যমে আবারো নির্বাচিত হওয়ার আশা করছি।’
বগুড়া জেলা জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক লুত্ফর রহমান স্বপন জানান, এখানো কোনো প্রার্থী চূড়ান্ত হয়নি। ৩ ডিসেম্বর প্রার্থীরা তাদের মনোনয়নপত্র দাখিল করবেন বলে জানা গেছে।
বিডি-প্রতিদিন/২ ডিসেম্বর ২০১৫/শরীফ