বরিশালের আগৈলঝাড়ায় ওসিসহ দুই পুলিশ সদস্যের দুই দফা নির্যাতনে আহত গাছ ব্যবসায়ী ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আসাদুজ্জামান বাদল সেরনিয়াবাতকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ শনিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার আসাদুজ্জামান বাদল সেরনিয়াবাত শেরাল উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এবং গৈলা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একই উপজেলার সেরাল গ্রামের আবু সেরনিয়াবাতের ছেলে গাছ ব্যবসায়ী আসাদুজ্জামান বাদল সেরনিয়াবাত আজ দুপুরে দক্ষিণ শিহিপাশা গ্রামের সিরুর দোকানে চা পান করছিলেন। ওই পথ দিয়ে আগৈলঝাড়া থানার ওসি মনিরুল ইসলাম থানার পিকাপ নিয়ে স্থানীয় এমপি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ’র সেরালের বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে সড়কের পাশে রাখা গাছ পিকাপে বাধলে ওসি মনিরুল ইসলাম ব্যবসায়ী বাদলকে সড়কের পাশে গাছ রাখার অপরাধে গালাগাল করেন। এক পর্যায়ে পিকাপ থেকে নেমেই ওসি মনিরুল ইসলাম এবং পিকাপ চালক মোকলেচুর রহমান গাছ ব্যবসায়ী বাদলকে চড় থাপ্পর মারে বলে অভিযোগ করেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
নির্যাতনের শিকার বাদল অভিযোগ করেন, মারধরের পর ওসি এবং তার ড্রাইভার পিকাপ নিয়ে চলে যায়। দিবালোকে পুলিশের নির্যাতনে মানহানী হওয়ায় এ ঘটনার বিচার চাইতে বাদল ঘটনার পরপরই স্থানীয় এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ’র শেরালের বাড়ি যায়। নালিশ করতে যাওয়া বাদলকে হাসানাত আবদুল্লাহ’র বাড়িতে প্রবেশ করতে দেখে উত্তেজিত হয়ে পড়েন ওসি মনিরুল। এ সময় ওই বাড়ির চত্ত্বরে দ্বিতীয় দফায় বাদলকে অমানুষিক নির্যাতন করেন ওসি মনিরুল এবং তার পিকাপ ড্রাইভার মোকলেচুর রহমান।
পরে স্থানীয়রা বাদলকে উদ্ধার করে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের শয্যায় চিকিৎসাধীন বাদল সেরনিয়াবাত গৌরনদী প্রেসক্লাবের সাধারন সম্পাদক সঞ্জয় কুমার পালের কাছে এসব অভিযোগ করেন।
বাদলের চাচাতো ভাই মো. লাবু সেরনিয়াবাত অভিযোগ করেন, পুলিশের দুই দফা পুলিশের নির্যাতনে বাদলের শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। তার এক চোখের অবস্থা খারাপ। পুরো শরীরে আঘাতের বহু চিহ্ন রয়েছে বলে তিনি দাবি করে।
আগৈলঝাড়া থানার ওসি মনিরুল ইসলাম জানান, পতিহার এলাকায় রাস্তায় কাটা গাছ রাখায় যান চলাচলে প্রতিবন্ধকতার সৃস্টি হয়। এনিয়ে পিকাপের চালক মোকলেস এবং গাছের মালিক বাদলের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। পরে স্থানীয় এমপি’র বাড়িতে উভয়ের মধ্যে হাতাহাতি হয়।
জেলা পুলিশ সুপার এসএম আক্তারুজ্জামান জানান, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কিংবা কোন বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিকে পুলিশ মারধর করেছে কিনা তা তার জানা নেই। তবে কাটা গাছ রাস্তায় রাখা নিয়ে পুলিশের পিকাপের চালকের সঙ্গে এক ব্যক্তির বাকবিতন্ডা হয়েছে বলে একটি খবর তিনি শুনেছেন। নির্যাতনের ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান পুলিশ সুপার।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৬ জানুয়ারি ১৬/ সালাহ উদ্দীন