সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে আওয়ামী লীগ নেতা কোরবান আলী (৪০) খুনের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করেছেন নিহতের বড় ভাই মাজেম প্রামানিক। মঙ্গলবার সকালে দায়ের করা মামলায় কায়েমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান আলীসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে মামলার অপর আসামিদের নাম জানায়নি পুলিশ।
আধিপত্য-জমিজমার বিরোধ ও ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সোমবার রাত নয়টার দিকে উপজেলার শায়েস্তাবাদ এলাকায় কোরবান আলীকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। নিহত কোরবান আলী উপজেলার কায়েমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সরাতৈল গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে।
শাহজাদপুর থানার ওসি (তদন্ত) মনিরুল ইসলাম জানান, কাশিনাথপুর বাজার থেকে আওয়ামী লীগ নেতা কোরবান আলী সরাতৈল নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। তিনি শায়েস্তাবাদ শহিদের বাড়ির কাছে পৌঁছলে দুর্বৃত্তরা পিছন থেকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে ঘাড়ের উপরি অংশে আঘাত করে। এতে দেহ থেকে ঘাড় প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে ঘটনাস্থলেই কোরবান আলী মারা যান। সংবাদ পেয়ে রাতেই লাশ উদ্ধার করা হয়। সকালে ময়না তদন্ত শেষে দুপুরে পরিবারের লোকের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, সড়াতৈল গ্রামের ঢোকলা পরিবার ও মোল্লা পরিবারের মাঝে জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে ২০১২ সালে তিনটি খুনের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় মামলা চলছে। এছাড়াও এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু'গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। সম্প্রতি ইউপি নির্বাচনের মনোনয়ন নিয়েও দ্বন্দ্ব চলছিল। এরই ধারাবাহিকতায় পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকান্ড সংগঠিত করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হকসহ স্থানীয়রা জানান, নিহত কোরবান আলী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। প্রায় এক বছর আগে সাবেক এমপি চয়ন ইসলামের হাত ধরে আওয়ামী লীগে যোগ দেন এবং তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পান। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের একটি অংশের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। এ কারণেও কোরবান আলী খুন হতে পারেন।
নিহতের বড় ভাই নবিদুল ইসলাম জানান, মোল্লা পরিবারের সাথে আমাদের দ্বন্দ্ব ছিল। এর জের ধরে কোরবান আলীকে কয়েকবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। রাতে কাশিনাথপুর বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে মোল্লা পরিবারের লোকজনই কোরবান আলীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে বলে তিনি দাবি করেন।
এবিষয়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান আলী জানান, কায়েমপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগে কোন দ্বন্দ্ব ছিল না। ইউপি নির্বাচন বা দলীয় কোন্দলের কারণে কোরবান আলী খুন হন নাই। ধারণা করা হচ্ছে পূর্ব শত্রুতার জেরেই তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, কোরবান আলীর সাথে আমার সুসম্পর্ক ছিল। ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার জন্য ষড়যন্ত্র করে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/১ মার্চ ২০১৬/ এস আহমেদ