রাজশাহীর বাগমারার শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের বারইপাড়ায় গ্রাম্য বিরোধের জের ধরে ৬৫ কৃষক পাচ্ছেন না বোরো খেতে সেচ সুবিধা। সেচ না দেওয়ায় হুমকির মুখে পড়েছে প্রায় ৫০ বিঘার বোরো ক্ষেত। কৃষকদের অভিযোগ, তাদের প্রতিপক্ষ গ্রামের লোকজন তিনটি গভীর নলকূপের নিয়ন্ত্রক। তাদের হুমকির কারণে গ্রামে ফিরতে পারছেন না ৬৫ পরিবার। বুধবার সকালে বাগমারা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী কৃষকরা এসব অভিযোগ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে জয়নাল আবেদিন লিখিত বক্তব্যে জানান, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি গ্রামের বিবাদমান দুটি পক্ষের মধ্যে মারামারির জের ধরে ওইদিন প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট করে। তাদের পক্ষের ৬৫টি পরিবার সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কায় গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। সেই থেকে তারা গ্রামের বাইরের আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে অবস্থান করছেন। এই সুযোগে প্রতিপক্ষ তাদের ধানক্ষেতে সেচ দেওয়া বন্ধ রেখেছেন। গ্রামের তিনটি গভীর নলকূপের সেচ কাজ প্রতিপক্ষের লোকজন নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। তাদের লোকজনই গভীর নলকূপের অপারেটর। এরা হলেন আজিজুল ইসলাম, আবদুল মালেক ও জয়নাল আবেদিন।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, সেচ না দেওয়ায় তাদের বোরোক্ষেত হুমকির মুখে আছে। সংবাদ সম্মেলনে জুয়েল রানা, সুমন রেজা, জয়নাল আবেদিন, টিপুসহ ১২ জন কৃষক জানান, প্রতিপক্ষ গ্রুপ বেছে বেছে তাদের ক্ষেতে সেচ দিচ্ছে না। পালিয়ে থাকা ৬৫ জনের ধান ক্ষেতেরই একই অবস্থা। তাদের প্রায় ৫০ বিঘা জমিতে এক সপ্তাহ ধরে সেচ বন্ধ রাখা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন। এছাড়াও তারা ভয়ে এলাকায় ফিরতে পারছেন না। স্থানীয় ইউপি সদস্য মাসুদ আলী, আজিজুল, ও সফিকুল ইসলামের লোকজন তাদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন।
সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, একটি বিলের নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে পাঁচ বছর ধরে দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। স্থানীয়ভাবে একটি পক্ষের নেতৃত্বে আছেন সফিকুল ইসলাম, আজিজুল হক, ইউপি সদস্য মাসুদ রানা এবং অপর পক্ষে রয়েছেন রিয়াজ উদ্দিন। দুই গ্রুপের কারণে গ্রামটিতে পাঁচ বছর ধরে অশান্তি বিরাজ করছে বলেও তারা অভিযোগ করেছেন।
শুভডাঙ্গা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মহসিন আলী জানান, এক সপ্তাহ ধরে প্রতিপক্ষের ধানক্ষেতে সেচ দেওয়া হচ্ছে না। এটা অমানবিক। বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) বাগমারা জোনের সহকারী প্রকৌশলী সফিকুল ইসলাম জানান, কৃষকদের জমিতে সেচের জন্যই তাদের গভীর নলকূপ। তিনি জানান, ঘটনাটি তিনি জানেন না। তাকে লিখিতভাবে জানালে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাগমারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মতিয়ার রহমান জানান, ক্ষতিগ্রস্ত ও এলাকাছাড়া লোকদের পক্ষে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে মামলা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/ ০২ মার্চ, ২০১৬/ রশিদা