চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে ট্রাক চাপায় দুই পুলিশ কর্মকর্তা হত্যার ঘটনায় মূল মাদক ব্যবসায়ীকে খুঁজছে পুলিশ। কারণ হত্যাকান্ডের সময় ঘাতক ট্রাকে ছিল মূল মাদক ব্যবসায়ী এবং তার নির্দেশেই ঘটে ওই হত্যাকান্ড। হত্যাকান্ডটি ছিল পূর্ব পরিকল্পিত।
দুই পুলিশ কর্মকর্তা হত্যার সময় ঘাতক ট্রাকে বসা ছিল মাদক ব্যবসায়ী শিবগঞ্জ উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের চাকপাড়া গ্রামের পারভেজ ও ট্রাক হেলপার নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা থানার পাগলা এলাকার আনোয়ার হোসেন। কিন্তু হত্যাকান্ডের পর চালককে রেখে তারা পালিয়ে যায়। পুলিশ ও ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে দেয়া স্বীকারোক্তিতে এসব কথা জানিয়েছেন গ্রেফতারকৃত চালক ঝালকাঠি জেলার নলছিটি থানার অনুরাগ গ্রামের আওয়াল আলীর ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৩৮)।
সিরাজুল ওই ঘটনায় বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ মূল মাদক ব্যবসায়ী পারভেজকে গ্রেফতারে কয়েক দফা অভিযান চালিয়েছে। কিন্তু পারভেজ এখনও ধরাছোয়ার বাইরে। অপরদিকে ওই ট্রাকের হেলপার আনোয়ার হোসেনকেও ধরতে পুলিশ অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলে শিবগঞ্জ থানার ওসি এমএম ময়নুল ইসলাম জানিয়েছেন।
এদিকে শিবগঞ্জ উপজেলার অস্ত্র ও মাদক ব্যবসায়ীদের ধরতে জেলা প্রশাসক মো. জাহিদুল ইসলাম ও পুলিশ সুপার বশির আহমেদ পিপিএম রবিবার শিবগঞ্জে আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় সকলের সহায়তা চেয়েছেন। এদিকে পুলিশের একটি সূত্র ট্রাক চালক সিরাজুলের উক্তি উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শিবগঞ্জ থানার এসআই ছাদিকুল ইসলাম (৩২) ও সার্জেন্ট আতাউল ইসলাম (২৬) মাদক বহনকারী ট্রাকটিকে কানসাট গোপল নগর মোড়ে থামাতে সিগনাল দেয়। কিন্তু ট্রাকে থাকা মাদক ব্যবসায়ী পারভেজের নির্দেশে চালক ট্রাক না থামিয়ে পালাতে থাকে। এসময় ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তা মোটরসাইকেলে ধাওয়া করে কানসাট পল্লী বিদ্যুৎ মোড়ে ট্রাকের সামনে এলে মাদক ব্যবসায়ী পারভেজের নির্দেশ মতো তাদের চাপা দিয়ে ট্রাক নিয়ে পালিয়ে যায় চালক সিরাজুল। এতে তারা ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। পথে মাদক ব্যবসায়ী ও হেলপার ড্রাইভারকে রেখে ট্রাক থেকে পালিয়ে যায়। পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) বেলা ১১টার দিকে ১৪৫০ বোতল ফেন্সিডিলসহ ট্রাক চালক সিরাজুলকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
এদিকে একটি সূত্র জানায়, ক্ষমতাসীনদলের নাম ভাঙিয়ে শিবগঞ্জ উপজেলার কতিপয় বর্তমান ও সাবেক জনপ্রতিনিধি মাদক ব্যবসায়ীদের পৃষ্ঠপোষকতা করায় প্রতিদিন বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ফেন্সিডিলসহ মাদকদ্রব্য আনা অব্যাহত রয়েছে। যার ফলশ্রুতিতে পুলিশ, বিজিবি ও র্যাব প্রায় প্রতিদিনই আগ্নেয়াস্ত্র, ফেন্সিডিলসহ মাদকদ্রব্য আটক করতে সক্ষম হচ্ছে।
৯বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল আহমেদ জুনাইদ আলম খান বলেছেন, সীমান্তে মাদকসহ আগ্নেয়াস্ত্র পাচার রোধে বিজিবি জিরো টলারেন্স ভূমিকা পালন করছে। মাদক ব্যবসায়ীদের ধরিয়ে দিতে তিনি সকলের সহায়তা কামনা করে বলেন, মাদক ও অস্ত্র ব্যবসায়ীরা দেশকে পঙ্গু করে দিচ্ছে। তাই তারা যত ক্ষমতাধরই হোকনা কেন এ ব্যাপারে কোন ছাড় দেয়া হবে না।
বিডি-প্রতিদিন/০৭ মার্চ ২০১৬/ এস আহমেদ