সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দুবলার আলোরকোলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের রাস পুণ্যস্নান উৎসবে ঘিরে হরিণ নিধনে মেতে উঠেছিল শিকারি চক্র। বন বিভাগের পৃথক তিনটি অভিযানে রেঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৪২ জন হরিণ শিকারিকে।
এ সময় হরিণ শিকারকাজে ব্যবহৃত ৪টি ট্রলার, একটি একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও বিপুল পরিমাণ হরিণ শিকারের ফাঁদ জব্দ করা হয়েছে।
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, রাস পুণ্যস্নান উৎসবে পুণ্যার্থীর ছদ্মবেশে বনে প্রবেশ করে এই দুষ্কৃতকারীরা। তারা বন বিভাগ থেকে রাস উৎসবের পুণ্যার্থী হিসেবে পাস (অনুমতিপত্র) সংগ্রহ করে হরিণ শিকারের প্রস্তুতি নিয়েছিল। এসব শিকারিরা খুবই হিংস্র এবং বেপরোয়া। তারা রাস উৎসবের আড়ালে হরিণ শিকারের বড় ধরনের পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নিয়ে বনে প্রবেশ করে।
তিনি আরও জানান, গত শনিবার (১ নভেম্বর) রাতে রেঞ্জের কোকিলমনি হোন্দলে বনাঞ্চল থেকে হরিণ শিকারের প্রস্তুতিকালে ৭ শিকারিকে আটক করেন স্মার্ট টিমের সদস্যরা। তাদের কাছ থেকে বন বিভাগের পতাকাবাহী ২টি ট্রলার, ১০০ ফুট হাঁটাফাঁদসহ বিভিন্ন মালামাল জব্দ করা হয়। ৩ নভেম্বর দুপুরে আলোরকোল এলাকার ডিমের চরে হরিণ শিকারের ফাঁদ পাতার সময় একজনকে আটক করেন বনরক্ষীরা। তখন ওই শিকারির সঙ্গে থাকা অন্য শিকারিরা শরণখোলা রেঞ্জের বন সংরক্ষক (এসিএফ) রানা দেবকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এ ঘটনায় রাফি হাসান (২৬), শহিদ মল্লিক (২৮) ও আল আমিন আকুঞ্জি (২৭) নামে ৩ শিকারিকে ১৮টি হরিণ ধরার ফাঁদ ও একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকাসহ গ্রেফতার করা হয়। বুধবার আলোরকোল থেকে হরিণ শিকারের চেষ্টাকালে বিপুল পরিমাণ শিকারের ফাঁদ ও দুটি ট্রলারসহ আরও ৩২ জন শিকারিকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার ৪২ শিকারির বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) বিকেলে বাগেরহাট আদালতে চালান করা হয়েছে। তাদের বাড়ি বাগেরহাটের রামপাল, মোংলা এবং খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন এলাকায়। এসব অভিযানে বন বিভাগের পতাকাবাহী দুটি ট্রলার, প্রায় সাড়ে চার হাজার ফুট নাইলনের সুতার তৈরি হরিণ ধরার ফাঁদসহ বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার হয়েছে। সুন্দরবনে হরিণ শিকার রোধে বন বিভাগের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।
বিডি প্রতিদিন/কেএইচটি