চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের তৃণমূল পর্যায়ের সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে। ধীরে ধীরে সকল সমস্যা সমাধান করা হবে। এ জন্য নগরবাসীকে তার ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরের কাজীর দেউড়ি ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের দায়িত্বগ্রহণের এক বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
চসিক মেয়র বলেন, ‘আমি এই শহরের সন্তান। এই শহরেই আমার বেড়ে ওঠা। তৃণমূলের কোথায় কি সমস্যা, তা আমার জানা আছে। ইতোমধ্যে সমস্যা চিহ্নিত করে কাজ শুরু করেছি। ধীরে ধীরে এর সুফল পাবেন। আমাকে একটু সময় দেন। আমার ওপর আস্থা রাখুন।’
তিনি বলেন, ‘বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস হবে, গ্রিন ডিজেল হবে। আপনারা বর্জ্য বিক্রি করবেন, আমরা টাকা দেব। সেই সময় চলে আসবে। কোনোক্রমে হতাশ হবেন না। যে টাকা এখন ডোর টু ডোর বাবদ দিচ্ছেন ৭০ টাকা, সেটি আপনাদের বিনিয়োগ। এক পর্যায়ে এটা বিনামূল্যে হয়ে যাবে। আরও পরে উল্টো টাকা আপনারা পাবেন।’
চসিক মেয়র আরও বলেন, ‘এ বছর ৫০-৬০টি বড় বড় রাস্তা উপহার দেব। ১০টির নাগরিক সেবা নিয়ে আমাদের চট্টগ্রাম অ্যাপস চালু হবে ডিসেম্বরে। নগরে ৩ হাজার টনের বেশি বর্জ্য তৈরি হয়। ২ হাজার ২০০ টন আমরা সংগ্রহ করতে পারি। আমি ডোর টু ডোর প্রকল্প চালু করেছি। ঘর প্রতি ৭০ টাকার বেশি নিলে ফেসবুকে না দিয়ে চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তাকে লিখিত জানাবেন, তাদের বাতিল করে দেব। দেশে প্রথম চট্টগ্রামে বায়োগ্যাস উৎপাদন করতে যাচ্ছি। শহর ক্লিন রাখতে হলে শতভাগ বর্জ্য সংগ্রহ করতে হবে। ডোর টু ডোর প্রকল্পের কারণে এ মাসে ৫০০ টন বেশি বর্জ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছি।’
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘কিশোর গ্যাং বড় চ্যালেঞ্জ। কিশোরদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরি করতে হবে। মাদকের কুফল জানাতে হবে। এর জন্য অভিনেতা পলাশের সঙ্গে একটি প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘গত একবছরে সাড়ে তিন লাখ পরিবারকে নাগরিক কার্ড দেওয়া হয়েছে। এমনভাবে কার্ড দেওয়া হয়েছে, যাতে একই পরিবার দুটি কার্ড না পায়। অন্যদিকে বেকারদের জন্য আইসিটি করা হবে কালুরঘাটে। চর বাকলিয়ায় পর্যটনটাউন করা হবে। সেখানে অনেকে মানুষ চাকরি পাবে। মনোরেল প্রকল্প শুরু হলে ৮-১০ হাজার বেকারকে চাকরি দিতে পারব।’
বিশেষ অতিথি ডিআইজি মো. আহসান হাবীব পলাশ বলেন, ‘সারাদেশের মানুষ নিশ্বাস নিতে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বেড়াতে আসেন। তাই পুরো চট্টগ্রামকে নিশ্বাসের জায়গায় পরিণত করতে হবে। চট্টগ্রাম শহরে ভালো কোনো পার্ক নেই। ঢাকার রমনা পার্কের মতো পার্ক, বোটানিক্যাল গার্ডেন ও অ্যাকুয়ারিয়াম দেখতে চাই। বন্দর নিয়ে উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যক্তিস্বার্থে বাধা দেওয়া হয়। চট্টগ্রাম বাঁচলে দেশ বাঁচবে। আমি চট্টগ্রামের মানুষ নই। কিন্তু চট্টগ্রামকে আমরা ভালোবাসি।’
চসিকের সচিব মো. আশারাফুল আমীনের সভাপতিত্বে অনষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দেন নগর জামায়াতের সাবেক আমীর শাহাজাহান চৌধুরী, বর্তমান আমীর নজরুল ইসলাম, ডিআইজি মো. আহসান হাবীব পলাশ, সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ, সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. নুরুল করিম, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোহাম্মদ নূরুল্লাহ নূরী ও চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি মনোয়ারা বেগম।
অনুষ্ঠানে মেয়রের এক বছরের কার্যক্রমের ওপর তথ্যচিত্র প্রদর্শন ও উন্নয়ন প্রতিবেদনের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। মেয়র প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সিস্টেম উদ্বোধন করেন।
বিডি-প্রতিদিন/আশফাক