আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে ঘিরে ফের আঞ্চলিক দলগুলোর দখলে পাহাড়। শুরু হয়েছে অবৈধ অস্ত্রের ভয় দেখানো খেলা। প্রাণ নাশ, অপহরণ, গুম, খুনের আতঙ্কে এলাকা ছাড়া খোদ (ক্ষমতাশীল দল) জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। এমন অভিযোগ করেছে রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ সদস্য মাহবুবুর রহমান।
তিনি বলেন, নির্বাচনমুখী আঞ্চলিক দলগুলো মরিয়া প্রতিটি ইউনিয়নে নিজেদের প্রার্থীকে জেতাতে। তাছাড়া এলাকা দখল, আধিপত্য ও প্রভাব বিস্তারের মহাৎসবে মেতেছে আঞ্চলিক দল পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) ও ইউপিডিএফ। এসব কারণে বিগত সময় তৃতীয় ধাপে রাঙামাটি ইউপি নির্বাচন স্থাগিত করা হয়। কিন্তু তারপরও আঞ্চলিক দলগুলোর অবৈধ অস্ত্রবাজি বন্ধ হয়নি।
শুক্রবার সকাল ১১টায় রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন আওয়ামীলীগ নেতা মাহবুবুর রহমান ।
এসময় রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মো. রুহুল আমিন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধরাণ সম্পাদক মুছা মাতাব্বর, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামাল উদ্দিন, আওয়ামী লীগ নেতা অভয় প্রকাশ চাকমা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সাধরাণ সম্পাদক মুছা মাতাব্বর বলেন, সন্ত্রাসীদের অবৈধ অস্ত্রের হুমকিতে রাঙামাটি ১০টি উপজেলার ৪৯টি ইউপির মধ্যে ৪৬টিতে নৌকা প্রতীকে প্রার্থী দেওয়া সম্ভব হয়েছে। কিন্তু ৩টি ইউনিয়নে (জুরাছড়ি উপজেলার ২নং বনযোগী ছড়া ইউনিয়ন, সদর উপজেলার কুতুকছড়ি ইউনিয়ন, নানিয়ারচর উপজেলার ঘিরাছড়ি ইউনিয়ন ও কাউখালী উপজেলার ফটিকছড়ি ইউনিয়ন) আওয়ামী লীগের কোন প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র জমা দেয়া সম্ভব হয়নি। কারণ অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানিতে পার্বত্য এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক। এখানকার সাধারণ মানুষ অবৈধ অস্ত্রধারীদের কাছে খুব অসহায়। নির্বাচনে সাধারণ মানুষ কেউ অবাধে ভোট দিতে পারবেনা। স্থানীয় রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ছাড়া অন্যরা মনোনয়নপত্র পর্যন্ত জমা দিতে পারছেন না। পার্বত্য এলাকা থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার ছাড়া রাঙামাটিতে কখনও সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ ইউপি নির্বাচন সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, ইউপি নির্বাচনের আগে পার্বত্য এলাকা থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বারবার চিরুণী অভিযানের দাবি জানিয়ে আসছি আমরা। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন কোন কার্যকর পদক্ষেপ দেখা যায়নি।
উল্লেখ্য, ১৫ মার্চ ঘোষিত তফসিলে রাঙামাটির ১০ উপজেলার ৪৯টি ইউনিয়নের পরিষদের ভোট ২৩ এপ্রিল হওয়ার কথা থাকলেও ওই এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা নির্বাচন স্থগিত করা হয়। এসব ইউনিয়নের নির্বাচন ষষ্ঠ ধাপে আগামী ৪ জুন হওয়ার কথা রয়েছে।
বিডি প্রতিদিনি/ ১৩ মে, ২০১৬/ হিমেল-২১