এক কেজি মাংসের জন্য সাতক্ষীরায় ফাহিম আহমেদ (৮) নামে এক শিশুকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত চারজন পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এ স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।
দু'দিন নিখোঁজ থাকার পর গত ১৫ জুন সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুশখালি সীমান্ত সংলগ্ন একটি পাট ক্ষেত থেকে শিশু ফাহিমের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
ফাহিমের হত্যার ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে শুক্রবার (১৭ জুন) রাতে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুশখালী গ্রাম থেকে একই পরিবারের ৪ সদস্যকে আটক করে পুলিশ।
এরা হলেন-কুশখালী গ্রামের মুজিবর রহমান (৬০), তার স্ত্রী ছফুরা খাতুন (৫৩), ছেলে ইব্রাহিম হোসেন (৩৩) ও ইসরাফিল হোসেন (২৮)। তবে ইসরাফিল হোসেনের স্ত্রী তামান্না খাতুনকে আটক করা হলেও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়।
গ্রেফতারকৃতদের উদ্ধৃতি দিয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল কালাম আজাদ জানান, স্থানীয় বাজারে মুজিবর রহমানের সাইকেল মেরামতের একটি দোকান রয়েছে। গত ১৪ জুন সকালে এক কেজি গরুর মাংস কেনেন মুজিবর রহমান। এ সময় শিশু ফাহিমকে দিয়ে ওই মাংস বাড়ি পাঠান তিনি।
ফাহিম মুজিবর রহমানের বাড়ি গিয়ে দেখে তাদের বাড়িতে কেউ নেই। এ সময় বাড়ির সামনে থাকা ভ্যানের ওপর মাংস রেখে চলে আসে সে। পরে মুজিবর রহমানের পরিবারের সদস্যরা বাড়ি এসে দেখে মাংসের প্যাকেট কুকুরে টানাটানি করছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মুজিবর রহমান ফাহিমকে ডেকে পাঠায় এবং মাংসের প্যাকেটের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করে। ফাহিম উত্তর দিলে মুজিবর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরা তাকে বেদম মারপিট করে। এতে ফাহিমের শরীরের বিভিন্ন অংশ ফেটে রক্ত বের হতে থাকলে রক্ত বন্ধ হওয়ার জন্য আঠা লাগায় মুজিবর ও তার পরিবারের সদস্যরা। তাতে রক্ত বন্ধ না হয়ে উল্টো ফাহিমের শরীরের বিভিন্ন অংশ ফুলে চাক চাক হয়ে ওঠে। তখন কোন উপায় না পেয়ে ফাহিমকে একটি বাক্সে বন্দি করে রাখে তারা। সেখানেই মৃত্যু হয় তার। মৃত্যুর পর রাতে কোন এক সময় ফাহিমকে পাশের একটি পাটক্ষেতে ফেলে দেয় তারা।
প্রসঙ্গত, ফাহিম সদর উপজেলার মৃগিডাঙ্গা গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী মনিরুল ইসলামের ছেলে। মায়ের সাথে কুশখালি গ্রামে নানা হাজি মোহাম্মদ আলির বাড়িতে থাকতো ফাহিম।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ