শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার চর সামন্তসার গ্রামে আয়না বেগম (২০) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার রাত ১২টার দিকে তার বসত ঘরের বারান্দা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করা হয়। গৃহবধূর স্বামী জসিম মাদবর পলাতক রয়েছে।
নিহত আয়না বেগম ডামুড্যা উপজেলার চর সিধলকুরা গ্রামের আলতাফ ফকিরের মেয়ে। সে গোসাইরহাট শামসুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। জসিম তাকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রেখে পালিয়ে গেছে এমন অভিযোগ করেছে আয়নার পরিবার।
গোসাইরহাট থানা ও গৃহবধূর পরিবার সূত্র জানায়, ডামুড্যা উপজেলার চরসিধলকুরা গ্রামের আলতাফ ফকিরের মেয়ে আয়না বেগমকে ২০১৪ সালে বিয়ে দেওয়া হয় গোসাইরহাট উপজেলার চর সামন্তসার গ্রামের মৃত আলিম উদ্দিন মাদবরের ছেলে জসিম মাদবরের কাছে। বিয়ের সময় তাদের সংসারের কাজে খরচ করার জন্য এক লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। বিদেশ যাওয়ার কথা বলে জসিম চার মাস আগে আরও তিন লক্ষ টাকা আনেন আয়নার বাবার বাড়ি থেকে। সে সম্প্রতি অটোরিকসা ক্রয় করার জন্য স্ত্রীকে আরও দেড় লক্ষ টাকা আনার জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। আয়না টাকা আনতে রাজি না হওয়ায় তাকে নির্যাতন করতে থাকে জসিম। এ নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ হতো। এক মাস আগে স্বামীর সাথে ঝগড়া করে আয়না তার বাবার বাড়ি চলে যায়। পরে স্বজনদের হস্তক্ষেপে জসিম আয়নাকে তার বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন। বুধবার রাত ১২টার দিকে জসিম মাদবরের বসত ঘরের বারান্দা থেকে আয়নার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে লাশ ময়না তদন্ত করার জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
আয়নার বাবা আলতাফ ফকির বলেন, টাকার জন্য জসিম আমার মেয়েকে মেরে ফেলবে তা ভাবতে পারিনি। আমি গরিব মানুষ, দিন আনি দিন খাই। মেয়ের সুখের কথা ভেবে জমি বিক্রি করে জসিমকে চার লক্ষ টাকা দিয়েছি। তার পরও সে আরও টাকার জন্য আয়নাকে নির্যাতন করতো।
জসিমের মা জীবন নেছা বলেন, ছেলের সাথে তার বউয়ের মাঝেমধ্যে ঝগড়া হতো। বুধবার রাতে সবাই খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। আয়না বারান্দায় বসে পড়ালেখা করছিল। হঠাৎ তার গোঙ্গানির শব্দ পেয়ে বারান্দায় গিয়ে দেখি তার দেহ ঝুলে আছে। তখন পুলিশকে খবর দেই।
গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোফাজ্জল হোসেন বলেন, যৌতুকের টাকা ও পরকীয়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। কীভাবে মেয়েটির মৃত্যু হয়েছে তা তদন্ত না করে বলা যাচ্ছে না। জসিমকে আটকের চেষ্টা করা হচ্ছে।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ