টানা বৃষ্টি আর উজানের ঢলে উত্তরাঞ্চলের অর্ধেকের বেশি জেলার অধিকাংশ এলাকা যখন বন্যায় প্লাবিত তখন এর বিপরীত চিত্র ঠাকুরগাঁওয়ে। মাঝে মাঝে আকাশে মেঘের ভেলা আশা জাগালেও কাঙ্খিত বৃষ্টির দেখা নেই। প্রখর রোদে পুড়ছে ঠাকুরগাঁওয়ের মাঠ-ঘাট। বৃষ্টি না হওয়ায় আমনের চারা রোপণ করে সেচ দিয়ে পানির চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করছেন চাষিরা। তবে এতে উৎপাদন ব্যয় কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ার আশংকা করছেন তারা।
ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে এ জেলায় প্রায় ১ লক্ষ ৩৩ হাজার ৩৩৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে সময় মত বৃষ্টি না হওয়ায় এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় দেখা দিয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকরা মাঠে ডিপ ও শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচের মাধ্যমে জমি চাষ করছেন।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা খোচাবাড়ি এলাকার কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, বোরো মৌসুমে ভালো ফলন পেলেও ধানের ন্যায্যমূল্য না পাওয়ায় অনেক লোকসান গুনতে হয়েছে। বর্ষার অর্ধেক সময় চলে যাচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ভারী বৃষ্টিপাতের দেখা নেই। মাঠ খাঁ খাঁ করছে। ডিজেল ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক জিনিসপত্রের মূল্য আকাশচুম্বী হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েছি।
আকচাঁ ইউনিয়নের বন্দরপাড়া গ্রামের কৃষক সাদেকুল ইসলাম জানান, আষাঢ-শ্রাবণ মাসে এরকম খরা কখনও দেখিনি। আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে নদীনালা, খালবিল নিচু জলাশয়গুলোয় পানি থৈ থৈ করত। এখন সেখানে মাঠঘাট ফেটে গেছে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের কৃষক আইনুল হক অভিযোগ করে বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় আমনের ক্ষেত পানির অভাবে ফেটে চৌচির। বাধ্য হয়ে ডিজেল চালিত শ্যালো মেশিন দিয়ে সেচের ব্যবস্থা করছি। এতে খরচ অনেক বেশি হবে।
ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক আরশেদ আলী খাঁন জানান, বর্তমানে যে অবস্থা চলছে, যদি এই অবস্থা বেশিদিন চলে তাহলে আমন আবাদে প্রভাব ফেলবে। আমরা আশা করছি দ্রুত এ খরা মৌসুম থেকে উদ্ধার পাবো। এছাড়াও ভাল ফলন পেতে কৃষকদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রোপণ শেষ করার পাশাপাশি সেচযন্ত্রগুলো সচল করার পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
বিডি-প্রতিদিন/এস আহমেদ